খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জামানত হারানো এস এম শফিকুর রহমান (মুশফিক) মেয়র হতে নির্বাচন কমিশনে ধরনা দিচ্ছেন। গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পুনঃ তদন্তের আবেদন জমা দিয়েছেন তিনি। নির্বাচন ভবনে সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এস এম শফিকুর রহমান বলেন, ২০২৩ সালের খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যতটুকু ভোট হয়েছে বা গণনা হয়েছে, এ ভোটে আমিই বিজয়ী হয়েছি, ইনশাআল্লাহ। আদালতে নিজের পক্ষে রায় পেয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির আদেশ রয়েছে জানিয়ে এ প্রার্থী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা সিইসি স্যারের সঙ্গে দেখা করলাম, উনার সঙ্গে কথা বলেছি, উনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, বলেছেন আইনের যে ব্যাখ্যা আছে সে অনুযায়ী আমরা এ কাজ করব।’
২০২৩ সালের খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে তালুকদার আবদুল খালেক ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮২৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আ. আউয়াল হাতপাখা প্রতীকে ভোট পান ৬০ হাজার ৬৪টি। অন্য প্রার্থীর মধ্যে জাতীয় পার্টি থেকে লাঙ্গল প্রতীকে শফিকুল ইসলাম মধু পান ১৮ হাজার ৭৪ ভোট, জাকের পার্টি থেকে গোলাপ ফুল প্রতীকে এস এম সাব্বির হোসেন পান ৬ হাজার ৯৬ ভোট। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে টেবিলঘড়ি প্রতীকে এস এম শফিকুর রহমান পেয়েছেন ১৭ হাজার ২১৮ ভোট। এর আগে ২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনেও জামানত হারান তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সিটি করপোরেশনের মেয়র, কাউন্সিলরদের অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের রায়ে জিতে চট্টগ্রামে শাহাদাত হোসেন চৌধুরী মেয়র পদে দায়িত্ব নিয়েছেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ইশরাক হোসেনের গেজেটও প্রকাশ করেছে ইসি। এবার খুলনা সিটি করপোরেশনের দাবি নিয়ে হাজির হন শফিকুর রহমান। সিইসির কাছে আবেদনে এস এম শফিকুর রহমান (মুশফিক) লিখেছেন, খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন ২০২৩-এ স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থী এবং প্রতীক ছিল টেবিলঘড়ি। আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার পরই ভোটের দিন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ব্যাপক ভোট জালিয়াতি, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, ভোটারদের প্রতি হুমকি, হয়রানি এবং প্রশাসনিক সীমাহীন অত্যাচার-নিপীড়নের কারণে অধিকাংশ ভোটার ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হতে পারেনি এবং ভোট দিতে পারেনি। আমি বহুবার অভিযোগ করেছি। কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ সে সময় রিটার্নিং অফিসার (খুলনা) নেননি। ইভিএম পদ্ধতি জালিয়াতির মাধ্যমে যে নৌকা প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেককে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও অযৌক্তিক। তদন্ত সাপেক্ষে দেখলে এর সত্যতা প্রমাণ পাওয়া যাবে। পুনঃতদন্ত করে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।