সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি শামসুল ইসলাম চৌধুরী হত্যা মামলায় তার ছেলের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া আরও দুজনের ব্যাপারে একই আদেশ দেওয়া হয়েছে। এক আসামির তিন বছরের দণ্ড ও একজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। সিলেট বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. শাহাদৎ হোসেন প্রামাণিক গতকাল এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতের পিপি মো. আনছারুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে মসুদ আহমদ চৌধুরী (মুন্না), তার সহযোগী মো. জাহের আলী ও মো. আনসার আহমেদ। তাদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা পলাতক ছিলেন। রায়ে মাইক্রোবাসচালক মো. বোরহান উদ্দিনকে তিন বছরের কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ঘটনার পর গ্রেপ্তার হওয়া মো. ইসমাইল হোসেন রানু নামের জনৈক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দিয়েছেন আদালত। ৩০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম চৌধুরীর চার মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। ছোট ছেলে মসুদ আহমদ চৌধুরী মুন্নাকে নিয়ে তিনি সিলেট নগরীর মিরবক্সটুলায় আজাদী-১১০ নম্বর বাসায় বাস করতেন। ২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবেবরাতে বাসা থেকে নিখোঁজ হন শামসুল ইসলাম। এ ঘটনায় মুন্না কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন। ২২ জুলাই মুন্না নিজেই আত্মগোপনে চলে যান। বাবা নিখোঁজের পর ৪ আগস্ট মুন্নার বড় ভাই মাহমুদ আহমদ চৌধুরী বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। মামলার এক সপ্তাহ পর র্যাব অভিযান চালিয়ে বোরহান, আনসার ও রানুকে আটক করে।
এর মধ্যে আনসার ও বোরহান আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়। ২৭ আগস্ট ছাতকে সুরমা নদী থেকে শামসুল ইসলামের লাশের কিছু অংশ এবং পাঞ্জাবি ও টুপি উদ্ধার করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে লাশের অংশটি শামসুল ইসলামের বলে নিশ্চিত হন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
মামলার বরাত দিয়ে পিপি মো. আনছারুজ্জামান আরও জানান, শবেবরাতে নামাজরত অবস্থায় প্রবীণ আইনজীবী শামসুল ইসলাম চৌধুরীকে তার ছেলে মসুদ আহমদ চৌধুরী মুন্না পেছন থেকে প্রথমে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এতে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাকে চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে অচেতন করে মাইক্রোবাসে তুলে ছাতকের মল্লিকপুর এলাকার সুরমা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। বাসার সামনের জায়গা নিজের নামে লিখে না দেওয়ায় মুন্না ক্ষিপ্ত হয়ে পরিকল্পিতভাবে তার বাবাকে খুন করে বলে জানান পিপি আনছারুজ্জামান।