জেলার দুমকী উপজেলার আলোচিত সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদ কন্যা লামিয়া আক্তারের আত্মহত্যার পর তার মায়ের মানসিক ও শারীরিক অবস্থার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে রুমা বেগমের জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় পেশাদার কাউন্সেলিং নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার পটুয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. ইউসুফ হোসেন এ মানবিক আদেশ দেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, লামিয়া আক্তার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(৩) ধারায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছিলেন। মামলাটি এখনো তদন্তাধীন রয়েছে। এরই মধ্যে অভিযুক্ত দুই কিশোর শাকিব ও সিফাত গ্রেপ্তার হয়ে যশোরের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে আটক রয়েছে। কিন্তু মামলার তদন্ত চলাকালেই গত ২৬ এপ্রিল ঢাকার আদাবর থানার একটি ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন লামিয়া। বিষয়টি তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতকে লিখিতভাবে অবহিত করেন। লামিয়ার বাবা জসিম হাওলাদার জুলাই আন্দোলনে শহীদ। স্বামীর মৃত্যু, মেয়ের সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়া এবং অবশেষে আত্মহত্যার মতো পরপর ঘটনার ফলে লামিয়ার মা রুমা বেগম চরম মানসিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েন। ২৭ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তিনি পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বর্তমানে তিনি দুই নাবালক সন্তানসহ অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। এই প্রেক্ষাপটে আদালতের বিচারক আদেশে বলেন, ‘রুমা বেগমের জীবনের ওপর দিয়ে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিয়োগান্তক ঘটনাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছেন, যা সহজেই অনুমেয়। তাই তার জন্য কাউন্সেলিং বা সাইকোথেরাপির ব্যবস্থা গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন।’ আদেশে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তিনি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র (বালক), পুলের হাট, যশোরে কর্মরত অথবা অন্য কোনো উপযুক্ত স্থানে কর্মরত সাইকোসোশ্যাল কাউন্সেলরের মাধ্যমে রুমার মানসিক কাউন্সেলিংয়ের যথাযথ ব্যবস্থা করেন। কাউন্সেলিং সম্পন্ন হলে সংশ্লিষ্ট কাউন্সেলরের প্রত্যয়নপত্রসহ বিষয়টি তদন্তকারী কর্মকর্তা দুমকী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আদালতকে অবহিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদেশের অনুলিপি সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পটুয়াখালী পুলিশ সুপার, যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক, ওসি দুমকী থানা এবং সমাজসেবা কর্মকর্তা, দুমকীসহ সংশ্লিষ্ট সবার কাছে পাঠানো হয়েছে।