কিছুদিন ধরে রাজশাহীর আবহাওয়ায় তাপের তীব্রতা। এতে শুকিয়ে যাচ্ছিল আমের কড়ালি। গাছের গোড়ায় সেচ ও গাছে পানি স্প্রে করে আম রক্ষার চেষ্টা করছিলেন চাষিরা। বৃষ্টির অপেক্ষায় ছিলেন তারা। অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টির দেখা মেলে বৃহস্পতিবার।
চাষিরা জানান, এই বৃষ্টির ফলে আমের বোঁটা শক্ত হবে, ঝরে পড়া কমবে। কয়েক দিনের মধ্যেই শুরু হবে আমে ব্যাগিংয়ের কাজ। তার আগে এমন বৃষ্টিতে আমের গায়ে জমে থাকা ধুলোবালি ধুয়ে গেছে। ফলে ব্যাগে ঢোকার পর আম থাকবে ঝকঝকে ও দাগহীন।
আম রপ্তানির সঙ্গে জড়িত বাগান মালিক আনোয়ারুল হক জানান, এই বৃষ্টি অনেকটা ওষুধের মতো কাজ করেছে আমের জন্য।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ২৩ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। রাজশাহী ছাড়াও আম উৎপাদনকারী জেলা নওগাঁ, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টিতে কিছু এলাকায় অল্প কিছু আম ঝরেও পড়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম চাষি মোজাহের আলী বলেন, এবার বৃষ্টিপাত কম। কড়ালি ঝরেপড়া রোধে গাছে নিয়মিত সেচ দিতে তাদের খরচ বাড়ছিল। বৃষ্টি হওয়ায় খরা না হওয়া পর্যন্ত সেচের দরকার হবে না। রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আম বৃষ্টি, ঝড়ঝঞ্ঝার মধ্যেই বেড়ে ওঠে। আগের বৃষ্টিতে কিছু ক্ষতি হলেও এবারের বৃষ্টি সোনায় সোহাগা হয়েছে। টানা খরার পর এই বৃষ্টি আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।’ তিনি বলেন, ‘বৃষ্টিপাতের সময় ঝোড়ো হাওয়ায় কিছু আম ঝরে পড়েছে, তবে খরার কারণে সেগুলোর বোঁটা আগে থেকেই দুর্বল ছিল। সামগ্রিকভাবে এবার আমের ঝরে পড়া কমবে।’
চলতি মৌসুমে নওগাঁর ৩০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির আমবাগান থেকে ৪ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর থেকে ৩ লাখ ৮৬ হাজার মেট্রিক টন এবং রাজশাহীর ১৯ হাজার ৬০০ হেক্টর বাগান থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আছে।