একজন খাঁটি মুসলমানের বৈশিষ্ট্য হলো, ইসলামের নৈতিক গুণাবলিকে আঁকড়ে ধরা। যেসব গুণে একজন মুসলমানকে প্রকৃত মুসলমান হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তার মধ্যে অন্যতম হলো প্রতিশ্রুতি রক্ষায় দৃঢ়তা।
মুমিন কারো সঙ্গে কোনো ওয়াদা করলে তা রক্ষা করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে। কেননা মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষার ব্যাপারে যত্নবান হওয়ার আদেশ করেছেন.
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘...এবং প্রতিশ্রুতি পূরণ করো, নিশ্চয়ই প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৩৪)। অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা অঙ্গীকার পূরণ করো।’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ১)।
কারণ মুমিন মাত্রই তার কথায়-কাজে মিল থাকতে হবে। মুমিন যা বলবে, তা অবশ্যই করবে। মুমিন কখনো কাউকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিতে পারে না। ছলনা করতে পারে না। মানুষকে ভুলভাল বুঝিয়ে স্বার্থ হাসিল করতে পারে না। কারণ কথায়-কাজে মিল না থাকলে মহান আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন। যেসব কাজ মহান আল্লাহকে ক্রোধান্বিত করে, তার মধ্যে অন্যতম হলো, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া, কথায়-কাজে মিল না থাকা।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা তা কেন বলো, যা তোমরা করো না? তোমরা যা করো না, তা বলা আল্লাহর নিকট বড়ই ক্রোধের বিষয়।’ (সুরা : সফ, আয়াত : ২-৩)।
এই আয়াতে মহান আল্লাহ প্রতিশ্রুতি রক্ষার ব্যাপারে উদাসীনদের ধমক দিয়েছেন এবং এ ব্যাপারে যত্নশীল হওয়ার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। যেসব কাজ আল্লাহকে রাগান্বিত করে, তা নিশ্চিতভাবে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন করবে—এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এ জন্যই হয়তো নবীজি (সা.) বলেছেন, যার আমানতদারি নেই তার ঈমানও নেই, যার অঙ্গীকারের মূল্য নেই (প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে না) তার দ্বিন নেই। (মুসনাদে আহমদ)।
অন্য হাদিসে তো এই অভ্যাসকে খাঁটি মুনাফিকের স্বভাব বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, চারটি স্বভাব যার মধ্যে বিদ্যমান সে হচ্ছে খাঁটি মুনাফিক।
যার মধ্যে এর কোনো একটি স্বভাব থাকবে, তা পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফিকের একটি স্বভাব থেকে যায়। ১. আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে, ২. কথা বললে মিথ্যা বলে, ৩. অঙ্গীকার করলে ভঙ্গ করে, এবং ৪. বিবাদে লিপ্ত হলে অশ্লীলভাবে গালাগাল করে। (বুখারি, হাদিস : ৩৪)
তাই প্রত্যেক মুমিনের উচিত প্রতিশ্রুতি রক্ষায় সচেষ্ট হওয়া। মহান আল্লাহকে ভয় করা। মানুষকে মিথ্যা প্রলোভন দেওয়া থেকে বিরত থাকা।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ