যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে আইসিইর অভিযানে গ্রেপ্তার এক প্রবীণ মার্কিন নাগরিক সরকারের কাছে ৫০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। অভিযানে মারাত্মক আহত রাফি শোহেদ বৃহস্পতিবার এ আবেদন করেন। লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়। রাফি শোহেদ লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি কার ওয়াশের দোকানের মালিক। তিনি ১৯৮০ সালের দিকে ইরান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যান। অন্যদিকে আইসিই হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি।
শোহেদের করা আইনি এই দাবিটি প্রকৃতপক্ষে মামলার আগের ধাপ। যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণত এ ধরনের দাবি প্রথমে ফেডারেল সরকারের কাছে প্রশাসনিকভাবে জমা দেওয়া হয়। পরে সেটি মামলায় রূপ নিতে পারে। ঘটনার দিনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মার্কিন নাগরিক রাফি শোহেদকে মুখোশ ও ভারী অস্ত্রধারী বেশ কয়েকজন আইসিই এজেন্ট নৃশংসভাবে মারধর করছে। পরে তাকে হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়।
শোহেদের অভিযোগ, সেখানে প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে চিকিৎসা ছাড়াই তাকে আটকে রাখা হয়। তিনি সাংবাদিকদের আরও বলেন, তারা আমার সঙ্গে যেভাবে আচরণ করেছে, যেভাবে হামলা চালিয়েছে, আমি শুধু মিনতি করে বলেছিলাম, ‘আমার হৃদরোগের সমস্যা আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাইরে কী ঘটছে তা জানতে লোকদের সঙ্গে কথা বলতে বের হয়েছিলাম।’
শোহেদ জানান, তারা আমাকে কিছুই বলেনি। শুধু বলল, ‘তুমি আইসির সঙ্গে ঝামেলা করতে পারবে না।’ এ মাসের শুরুতে আইসিই-এর অভিযানের সময় শোহেদের দোকানে ওই ঘটনা ঘটে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর কর্মসূচির অংশ হিসেবে এটি পরিচালনা করা হচ্ছে।
নির্বাচনি প্রতিশ্রুতিতে লাখ লাখ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করার ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট।
তবে অভিযানগুলো ঘিরে বিতর্ক রয়েছে। বিশেষ করে লস অ্যাঞ্জেলেসে। কারণ রাজ্যটিতে বহু জাতিগোষ্ঠীর বসবাস। তবে অভিযানে কেবল স্প্যানিশভাষী এবং কার ওয়াশের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে টার্গেট করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, তিন মুখোশধারী ব্যক্তি শোহেদকে টেনেহিঁচড়ে মাটিতে ফেলে দিয়েছে। পরে তাদের মধ্যে একজন ভুক্তভোগীর ঘাড়ে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরে।
৭৯ বছর বয়সি প্রবীণ জানান, তিনি তখন এজেন্টদের বলেন, ‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না, আমি শ্বাস নিতে পারছি না।’
শোহেদের আইনজীবীরা বলেছেন, অভিযানের সময় ‘সম্প্রতি হার্ট সার্জারি’ করেছেন জানালেও তার ক্লায়েন্টের অনুরোধ উপেক্ষা করা হয়েছে।
তবে পরে ট্রাম্প সমর্থক শোহেদকে কোনো অভিযোগ ছাড়াই মুক্তি দেওয়া হয়। আইনজীবীরা জানান, মুক্তির পর ভাঙা পাঁজর, কনুই ও মস্তিষ্কের গুরুতর আঘাতের জন্য হাসপাতালে চিকিৎসা নেন শোহেদ।