যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ক্যারিবীয় অঞ্চলে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ চালানোর অভিযোগ করেছে ভেনিজুয়েলা।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ভেনিজুয়েলার সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌযানগুলোতে মার্কিন হামলায় নিহতদের ঘটনায় জাতিসংঘের তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
ওয়াশিংটন জানিয়েছে, তারা ক্যারিবীয় সাগরে মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে ভেনিজুয়েলার উপকূলের আন্তর্জাতিক জলসীমায় যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে এবং পুয়ের্তো রিকোয় এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভলাদিমির পাদ্রিনো লোপেজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘সামরিক হুমকি’র প্রতিক্রিয়ায় একটি সামরিক মহড়ায় অংশ নেওয়ার সময় বলেন, এটি একটি অঘোষিত যুদ্ধ। মাদক ব্যবসায়ী হোক বা না হোক, কোনও প্রতিরক্ষার সুযোগ না দিয়েই ভেনিজুয়েলার মানুষদেরকে হত্যা করা হচ্ছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল তারেক উইলিয়াম সাব বলেন, ছোট নৌযানগুলোতে প্রতিরক্ষাহীন জেলেদের হত্যা করার জন্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার মানবতাবিরোধী অপরাধ। জাতিসংঘ কর্তৃক ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করা উচিত।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান গিল তার পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে ‘ক্যারিবিয়ান সাগরে মার্কিন সামরিক পদক্ষেপ অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানানোর’ আহ্বান জানিয়েছেন।
কয়েক দশকের মধ্যে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে সবচেয়ে বড় মার্কিন নৌ মোতায়েন এবং কথিত মাদকবাহী নৌযানগুলোর ওপর মার্কিন হামলাগুলো, ভেনিজুয়েলার ভূখণ্ডে আক্রমণ করার পরিকল্পনার অংশ— এমন আশঙ্কা জাগিয়ে তুলেছে।
বুধবার ভেনিজুয়েলা তাদের ক্যারিবীয় দ্বীপ লা অর্চিলা-তে তিন দিনের সামরিক মহড়া শুরু করে।
এ দ্বীপের কাছেই যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ভেনিজুয়েলার একটি মাছধরা নৌকা আট ঘণ্টা ধরে আটক রেখেছিল।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো, নাগরিকদের মিলিশিয়া প্রশিক্ষণে যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন।
মাদুরোকে যুক্তরাষ্ট্র মাদক কার্টেল পরিচালনার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে এবং তার বিরুদ্ধে ৫০ মিলিয়ন ডলারের পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার তিনি রাজধানীর নিম্ন আয়ের এলাকার বাসিন্দাদের সেনারা অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়ার ঘোষণা দেন।
মাদুরো অভিযোগ করেন, তার সরকারকে উৎখাত করতে যুক্তরাষ্ট্র একটি ‘সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনা’ করছে এবং ভেনিজুয়েলায় পুতুল সরকার বসিয়ে দেশটির তেল দখল করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, কারাকাস যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার বৈধ অধিকার প্রয়োগ করবে।
ট্রাম্প বলেছেন, মার্কিন বাহিনী ক্যারিবিয়ান অতিক্রমকারী তিনটি নৌকা ধ্বংস করেছে। তবে ওয়াশিংটন কেবল দুটি হামলার বিবরণ ও ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে যেখানে ১৪ জন নিহত হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এদের মাদক-সন্ত্রাসী হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ওয়াশিংটন বলেছে, তাদের অভিযান মাদক পাচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অংশ। আন্তর্জাতিক জলসীমায় হামলার বৈধতা নিয়ে প্রশ্নগুলো নাকচ করে দিয়েছে ওয়াশিংটন। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, সিনহুয়া, আরব নিউজ
বিডি প্রতিদিন/একেএ