দ্বিতীয় বার ক্ষমতা নেয়ার পর প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাজ্যে গেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সফরের প্রথম দিনেই উইন্ডসরে রাজা চার্লস ও রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্যরা তাকে উষ্ণ ও রাজকীয় সংবর্ধনা দিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প রাজকীয় ঘোড়ার গাড়িতে করে উইন্ডসর ক্যাসেলে পৌঁছান। সেখানে সুসজ্জিত সৈন্যদের গার্ড অব অনার পরিদর্শন করেন তারা। মার্কিন রাষ্ট্রপ্রধানকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন রানি ক্যামিলা এবং প্রিন্স ও প্রিন্সেস অফ ওয়েলস। এ সময় ব্যান্ড দলের সুরে বেজে ওঠে আমেরিকার জাতীয় সংগীত ‘দ্য স্টারস অ্যান্ড স্ট্রাইপস’।
এই সফরে দুই দেশের মধ্যে সরকারি উপহারও বিনিময় হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ২৫০তম মার্কিন স্বাধীনতা দিবসের স্মারক হিসেবে চামড়ার একটি ভলিউম এবং ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের দিনে বাকিংহাম প্যালেসে ওড়ানো একটি পতাকা উপহার দেওয়া হয়। ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পকে একটি অ্যানিয়া হিন্দমার্চ হ্যান্ডব্যাগ এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের শিল্পী কারা মারফির তৈরি রূপার বাটি উপহার দেয়া হয়েছে। রাজা চার্লসকে সামরিক জোটের প্রতীক হিসেবে প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ারের তলোয়ারের একটি প্রতিরূপ দেয়া হয়। কুইন ক্যামিলাকে দেওয়া হয় টিফানির তৈরি স্বর্ণ, হীরা এবং রুবি খচিত ব্রোচ।
এই সফরকে স্মরণীয় করতে সব ধরনের আয়োজন করেছে ব্রিটেন। ১৩০০ সেনা, রয়্যাল নেভি এবং আরএএফ সদস্যের অংশগ্রহণে এটি ছিল যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের সম্মানে আয়োজিত সবচেয়ে বড় গার্ড অব অনার। সাধারণত সামরিক বাহিনীর এত বড় সমাবেশ দেখা যায় না। ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেনকে সমর্থন এবং ন্যাটোতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি বজায় রাখার জন্য ব্রিটিশ সরকার এই বিশাল সামরিক আয়োজন করেছে।
আগের রাষ্ট্রীয় সফরের চেয়ে এই সফর ভিন্ন। সব অনুষ্ঠান উইন্ডসর এস্টেট এবং প্রধানমন্ত্রীর বাসস্থান চেকার্সের ভেতরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জনসাধারণের জন্য কোনো উন্মুক্ত অনুষ্ঠান রাখা হয়নি।
লন্ডনে ট্রাম্পের সফরের বিরুদ্ধে আন্দোলনও দেখা গেছে। উইন্ডসরেও ট্রাম্প-বিরোধী কিছু প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে। তবে তা মার্কিন অতিথিদের দৃষ্টির আড়ালে ছিল।
পরে প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার ট্রাম্পের সঙ্গে যোগ দেন। উইন্ডসরের আকাশে এফ-৩৫ জেট এবং রেড অ্যারোজের ফ্লাইপাস্ট দেখেন।
এই সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হবে সেন্ট জর্জস হলে আয়োজিত জাঁকজমকপূর্ণ ভোজসভা। সেখানে রাজা চার্লস এবং ট্রাম্প ভাষণ দেবেন। নৈশভোজের মেনুতে যুক্তরাজ্যের ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্যবাহী খাবার রাখা হবে বলে জানানো হয়েছে।
এই সফরের শুরুতে কয়েক বিলিয়ন ডলারের মার্কিন প্রযুক্তি বিনিয়োগ চুক্তিও ঘোষণা করা হয়েছে। তবে ট্রাম্প জানিয়েছেন, এই সফরের প্রধান উদ্দেশ্য হলো ‘বন্ধু' রাজা চার্লসের সঙ্গে দেখা করা।
সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল