দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে রাষ্ট্রায়ত্ত একচেটিয়া আধিপত্যের পর এবার পারমাণবিক শক্তি খাতে বেসরকারি সংস্থার প্রবেশাধিকার দিতে চলেছে ভারত। সরকারি সূত্র জানিয়েছে, বেসরকারি সংস্থাগুলিকে ইউরেনিয়াম আহরণ, আমদানি ও প্রক্রিয়াকরণের অনুমতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে নরেন্দ্র মোদির প্রশাসন।
সরকারের লক্ষ্য, ২০৪৭ সালের মধ্যে দেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১২ গুণ বাড়ানো। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ওই সময়ে ভারতের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় ৫ শতাংশ পারমাণবিক শক্তি থেকে আসবে। এর পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরও সীমিত অংশীদারিত্বের সুযোগ দেওয়া হবে বিদ্যুৎ প্রকল্পে।
এখন পর্যন্ত কৌশলগত নিরাপত্তা ও বিকিরণ ঝুঁকির কারণে ইউরেনিয়াম খনন, আমদানি ও প্রক্রিয়াকরণের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল সরকারের হাতে। তবে ব্যবহৃত জ্বালানির পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ ও প্লুটোনিয়াম বর্জ্য ব্যবস্থাপনা রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণেই থাকবে, যা বিশ্বব্যাপী প্রচলিত নিয়ম।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ভারতে প্রায় ৭৬০০০ টন ইউরেনিয়াম মজুদ রয়েছে, যা দিয়ে প্রায় ৩০ বছর ১০ হাজার মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। কিন্তু আসন্ন চাহিদা বৃদ্ধির মাত্র ২৫ শতাংশ দেশীয় উৎস থেকে মেটানো যাবে, বাকিটা আমদানি করতে হবে। এজন্য প্রক্রিয়াকরণ সক্ষমতাও বাড়াতে হবে।
এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে খনি, বিদ্যুৎ ও বৈদেশিক বিনিয়োগ সংক্রান্ত অন্তত পাঁচটি আইন পরিবর্তন করতে হবে বলে সূত্রের দাবি। ইতোমধ্যেই কয়েকটি বড় ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠী বিনিয়োগ পরিকল্পনা প্রস্তুত করতে শুরু করেছে।
এদিকে, ভারতের পারমাণবিক শক্তি নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিউক্লিয়ার রেগুলেটরি কমিশনের মধ্যে পারমাণবিক নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে সহযোগিতা বাড়াতে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। ৬ থেকে ৮ আগস্ট মার্কিন মুলুকের রকভিল শহরে এই বৈঠকে নতুন ও উন্নত রিঅ্যাক্টর প্রযুক্তি, নিরাপত্তা মূল্যায়ন, এবং জরুরি প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়।
ভারতের লক্ষ্য ২০৪৭ সালের মধ্যে ৮ গিগাওয়াট থেকে বেড়ে অন্তত ১০০ গিগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা অর্জন করা। উভয় দেশই ভবিষ্যৎ সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্র চিহ্নিত করেছে।
সূত্র: ডন
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল