সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের দায়ে সাবেক এক সিরিয়ান ইসলামপন্থী বিদ্রোহীকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন একটি ফরাসি আদালত।
বুধবার এই রায় দেওয়া হয়, যা ফ্রান্সের প্রথম ইউনিভার্সাল জাস্টিস মামলার রায়।
দণ্ডপ্রাপ্ত ওই বিদ্রোহীর নাম মাজদি নেমা। তিনি বিদ্রোহী গোষ্ঠী জায়েশ আল-ইসলাম-এর সাবেক মুখপাত্র ছিলেন।
তাকে যুদ্ধাপরাধে সহায়তা ও ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোরদের জোরপূর্বক নিয়োগে সহায়তার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছেন ফরাসি আদালত।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মার্সেই থেকে ফরাসি কর্তৃপক্ষ নেমাকে গ্রেফতার করে। তখন একটি ছাত্র বিনিময় কর্মসূচিতে দেশটিতে ভ্রমণ করেছিলেন তিনি।
সর্বজনীন এখতিয়ারের নীতির অধীনে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল, যা রাষ্ট্রগুলোকে গুরুতর অপরাধের জন্য অভিযুক্ত সন্দেহভাজনদের বিচার করার অনুমতি দেয়। সেগুলো যেখানেই সংঘটিত হোক না কেন। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় সংঘটিত অপরাধের বিচার ফ্রান্সে সর্বজনীন এখতিয়ারের অধীনে প্রথমবারের মতো হয়।
ইসলাম আলুশ নামে বেশি পরিচিত নেমা প্যারিস আদালতকে বলেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পক্ষে কোনও প্রমাণ নেই।
তিনি বলেন, ২০১৩ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে দামেস্কের বিদ্রোহী অধিকৃত শহরতলিতে প্রভাব বিস্তারকারী সশস্ত্র গোষ্ঠীতে তার কেবল সীমিত ভূমিকা ছিল।
ইসলামপন্থী নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা ডিসেম্বরে উৎখাত করার আগে বাশার আল-আসাদের সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করা প্রধান বিরোধী দলগুলোর মধ্যে একটি ছিল জাইশ আল-ইসলাম। তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বেসামরিক নাগরিকদের সন্ত্রাসী তৎপরতায় যুক্ত করার অভিযোগও তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে।
এই মামলাটি ইউনিভার্সাল জুরিসডিকশন নীতির আওতায় পরিচালিত হয়েছে। যেখানে যেকোনও দেশে সংঘটিত গুরুতর অপরাধের বিচার, অপরাধের অবস্থান নির্বিশেষে অন্য কোনও দেশেও করা যায়।
এটাই প্রথমবার সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ সংক্রান্ত কোনও অপরাধের বিচার ফ্রান্সে এই নীতির ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হলো।
জায়েশ আল-ইসলাম সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদবিরোধী এক প্রধান বিদ্রোহী গোষ্ঠী, ২০১৩ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে দামেস্কের বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত উপশহরগুলোয় তারা আধিপত্য বিস্তার করেছিল। গোষ্ঠীটি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আতঙ্ক সৃষ্টি করার অভিযোগেও অভিযুক্ত। সূত্র: ফ্রান্স২৪
বিডি প্রতিদিন/একেএ