জুলাই জাতীয় সনদের বাইরে গিয়ে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলে তার সব দায়দায়িত্ব সরকারের ওপরই বর্তাবে বলে জানিয়েছে বিএনপি। তারা সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, সনদে স্বাক্ষরকারী কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে তখন সেই সিদ্ধান্ত মান্য করার বাধ্যবাধকতা থাকবে না।
গতকাল রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের এই অবস্থানের কথা তুলে ধরেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এর আগে সোমবার রাতে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলটির স্থায়ী কমিটির সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভার সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে বিএনপি। এতে উপস্থিতি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাউদ্দিন আহমদ ও মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন খন্দকার মোশাররফ। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দীর্ঘ প্রায় এক বছরব্যাপী আলোচনা হয়। আলোচনার ভিত্তিতে কতিপয় নোট অব ডিসেন্টসহ ঐকমত্যের ভিত্তিতে রচিত জুলাই জাতীয় সনদ গত ১৭ অক্টোবর স্বাক্ষরিত হয়। দেশের সংবিধান ও আইন অনুযায়ী তা বাস্তবায়নে সবাই অঙ্গীকারবদ্ধ। খন্দকার মোশাররফ বলেন, সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে কেউ কেউ জুলাই জাতীয় সনদের বাইরে কোনো বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত ঘোষণার প্রসঙ্গে যেসব বক্তব্য দিচ্ছেন, তা বিভ্রান্তিকর। ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করার শামিল।
প্রজ্ঞাপন আইন হবে না : সংবাদ সম্মেলনে দলের অপর স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, গণভোট জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনে হবে, সেই অবস্থানে আছি। এখন কোনো প্রজ্ঞাপনকে যদি আদেশ হিসেবে নামকরণ করতে চায় এবং সেটার আইনি মর্যাদা না থাকে, তাহলে সেটা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকার প্রকাশ করতে পারে। কিন্তু সেটা আইন হবে না। তিনি প্রশ্ন তোলেন, নতুন নতুন ইস্যু তৈরি করে যারা আন্দোলন করছে, তাদের সঙ্গে আলাপ করতে হবে? তিনি বলেন, সরকার যদি সনদের বাইরে গিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, সেটা স্বাক্ষরকারী দলগুলো মানতে বাধ্য নয়।
প্রেসিডেন্ট অর্ডার জারির মতো অবস্থা দেশে নেই। কারণ এটা সংবিধানে নেই। তিনি বলেন, সনদে বিভিন্ন দলের কিছু নোট অব ডিসেন্ট আছে। সনদে উল্লেখ আছে-ইশতেহারে উল্লেখ করে রায় পেলে সেভাবে বাস্তবায়ন করবে, অথচ সুপারিশমালায় নেই।