বর্তমানে বাংলাদেশে কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাবারের বাজার প্রায় ৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার। ২০৩০ সালে এ বাজার প্রায় ৬ বিলিয়নে উন্নীত হবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। পোশাক খাতের পর এ খাত দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। রপ্তানিতেও এ খাতের অবদান দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি জিডিপি, রপ্তানি বৈচিত্র্য এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থানে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। কৌশলগত গুরুত্ব সত্ত্বেও এ খাতটি সম্ভাবনার তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে, বিশেষ করে মূল্য সংযোজনসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ‘কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প : দেশের সার্বিক উন্নয়নে গণমাধ্যমকর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক কর্মশালায় মূল প্রবন্ধে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এসব কথা বলেন।
প্রাণ গ্রুপের উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন। এ সময় বক্তব্য রাখেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল, ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক রিয়াজ আহমদ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের জনসংযোগ বিভাগের ডিজিএম তৌহিদুজ্জামান।
গোলাম মোয়াজ্জেম আরও বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর কৃষি প্রক্রিয়াকরণ খাত বর্তমানে নগদ প্রণোদনা, আমদানিকৃত উপকরণের ওপর শুল্ক ছাড়সহ যেসব সুবিধা ভোগ করছে তার ওপর প্রভাব পড়তে পারে। এলডিসি থেকে উত্তরণের পর এ খাতের সামর্থ্য বৃদ্ধির জন্য নানাবিধ সহায়তা দিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে সুদের হার সমন্বয়ের মাধ্যমে কম খরচে অর্থায়ন, উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য প্রণোদনা।
‘কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পের বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক প্রবন্ধে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল বলেন, ‘প্রাণ গ্রুপ শুরু থেকেই বাংলাদেশের কৃষির উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করছে। বর্তমানে আমরা যেসব খাদ্যপণ্য উৎপাদন করি, তার অধিকাংশ কাঁচামাল স্থানীয়ভাবে কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে থাকি এবং ১৪৮টি দেশে রপ্তানি করছি’। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের গুণমান এখন আন্তর্জাতিক মান অর্জন করেছে। দেশের গণমাধ্যম এ ইতিবাচক চিত্র তুলে ধরলে দেশীয় ব্র্যান্ডের প্রতি মানুষের আস্থা আরও বাড়বে। এর পাশাপাশি এ খাত এগিয়ে নিতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কাঁচামাল সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাত করা এবং এসব পণ্য বাজারজাত করার চ্যালেঞ্জ দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারলে এ শিল্প আরও এগিয়ে যাবে। ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক রিয়াজ আহমদ বলেন, ‘গণমাধ্যম শুধু সংবাদ প্রচার করে না, বরং সমাজে দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতিনির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কৃষি ও কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত খাতের সাফল্য, কৃষকদের গল্প, উদ্ভাবন ও বাজার সম্ভাবনা নিয়ে ধারাবাহিক ইতিবাচক প্রচারণা দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে’।