রাজধানীর পুরান ঢাকার সূত্রাপুরে শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে (৫৫) প্রকাশ্যে ফিল্মি স্টাইলে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় দুই শ্যুটারসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি পিস্তলও জব্দ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাত সোয়া ১২টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার রাত সাড়ে ১১টার দিকে দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলে এসে মামুনকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এই ঘটনায় ব্যবহৃত দুটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। দুই শ্যুটারের নাম- কুত্তা ফারুক, রবিন। এছাড়া রুবেল ও ইব্রাহিমসহ তিন সহযোগীও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিবি যুগ্ম কমিশনার মো. নাসিরুল ইসলাম জানান, সিলেট থেকে ধাওয়া করে পার্শ্ববর্তী জেলায় চারজনকে একসাথে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে দুটি পিস্তল ও ছয় রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে মোটরসাইকেলে করে এসে দুর্বৃত্তরা মামুনকে গুলি করে। তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হলে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, মামুন দৌড়ে কোনো একটি ভবনের গেটে প্রবেশের চেষ্টা করছেন। তখন দুই ব্যক্তি পেছন থেকে খুব কাছ থেকে মুহুর্মুহু গুলি করে। দুজনের মুখে ছিল মাস্ক, মাথায় ক্যাপ। দুজনের সঙ্গেই ছিল পিস্তল।
ময়নাতদন্তে মামুনের শরীরে সাতটি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ছয়টি শরীর ছেদ করে বেরিয়েছে, একটি পরে বের করা হয়।
মামুনের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুসারে, বাবার নাম এস এম ইকবাল, বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মোবারক কলোনি। স্ত্রী বিলকিস আক্তার বলেছেন, মামুন পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। তবে পুলিশ জানিয়েছেন, মামুন চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং এক সময় সানজিদুল ইসলাম ইমনের সহযোগী ছিলেন।
ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী বলেন, “মামুন ইমন-মামুন গ্রুপের সদস্য ছিলেন। এক সময় তিনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের সহযোগী ছিলেন। এই হত্যাকাণ্ড অপরাধজগতের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের অংশ হতে পারে।”
মামুন আগেও হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছেন। দুই বছর আগে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে তার গাড়িতে হামলার চেষ্টা হয়েছিল। সেই ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী ভুবন চন্দ্র শীল নিহত হন।
মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করতেন। তার ও ইমনের বাহিনী একসময় হাজারীবাগ, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও তেজগাঁও এলাকায় সক্রিয় ছিল।
ডিবি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বুধবার (১২ নভেম্বর) বেলা পৌনে ১২টায় মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাবেন।
বিডি প্রতিদিন/আশিক