সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘জাতীয় বাজেটে নারীদের জন্য বরাদ্দ মোটেও পর্যাপ্ত নয়। তাদের জন্য যে বরাদ্দ দেওয়া হয় সেটা খুবই কম। আবার যেটুকু দেওয়া হয় তার কাঠামোর মধ্যেও সমস্যা থাকে। বাজেটে যেটুকু বাকি থাকে সেটুকুও ঠিকমতো খরচ হয় না।’
গতকাল একটি হোটেলে ‘লিঙ্গ-প্রতিক্রিয়াশীল বাজেট প্রণয়ন এবং এফএফডি-ফোর ফলাফলের অগ্রগতির বিষয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের নারীবিষয়ক সংস্থা ‘ইউএন উইমেন’। অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশে লিঙ্গ প্রতিক্রিয়াশীল বাজেট : সংক্ষিপ্ত পরিসর’ তুলে ধরেন ইউএন উইমেনের লিঙ্গ পরিসংখ্যানবিষয়ক প্রোগ্রাম বিশ্লেষক নুবায়রা জেহিন, ‘লিঙ্গীয় দৃষ্টিকোণ থেকে অর্থনীতির অবস্থা সম্পর্ক’ নিয়ে উপস্থাপনা তুলে ধরেন সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। এ ছাড়া ‘লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নের জন্য চাহিদা ও অর্থায়ন’ নিয়ে বক্তব্য রাখেন সেন্ট্রাল লিগ্যাল এইড, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সেক্রেটারি রেখা সাহা। অনুষ্ঠানে সম্মাননীয় অতিথির বক্তব্য দেন ঢাকায় নিযুক্ত সুইডেন দূতাবাসের ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশনের প্রধান মারিয়া স্ট্রিডসম্যান। এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের যুগ্ম-সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ, মহিলাবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য ফেরদৌসী সুলতানা, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব তাসনিম জেবিন বিনতে শেখ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগ-২) নাজমুন নাহার হামিদ, ইউএন উইমেনের প্রতিনিধি গীতাঞ্জলি সিং প্রমুখ।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমাদের সংস্কার কমিশনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন ধরনের প্রত্যাশা জাগিয়েছে। এর ন্যূনতম কিছু প্রয়োগ না দেখলে আমরা মনে কষ্ট পাব। সরকার বিভিন্ন সংস্কারের পদক্ষেপে কমিশন বানাচ্ছে। আমি শুধু নারী কমিশনের কথা বলছি না। স্থানীয় সরকার, দুর্নীতি এমনকি সংবিধান ইত্যাদির বিষয়ে যে আলোচনা চলছে, তার ভিতরেও নারীদের বিষয়কে একটি মূলধারার বিষয় হিসেবে সংযুক্ত করতে হবে। এটা শুধু নারীর বিষয় না-এটা বাংলাদেশের জাতীয় বিষয়। এটা শুধু উন্নয়নের বিষয় না, এটা ন্যায্যতারও বিষয়।’ তিনি বলেন, ‘দেশে বাজেট প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে আমাদের যে অর্ধেক জনসংখ্যা নারী আছে, তাদের পরিবর্তনের কথা, তাদের উন্নয়নের কথা বিবেচনায় রেখে বাজেটে সুনির্দিষ্ট স্বচ্ছভাবে এবং ব্যবহারযোগ্যভাবে বাজেট দিতে হবে।’