অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, বাংলাদেশ এখন আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল নয়। আইএমএফের সব শর্ত মেনে আমরা ঋণ নিতে চাই না। আইএমএফের ঋণের বাকি দুই কিস্তির টাকা ছাড়াও আমাদের রিজার্ভ এখন স্থিতিশীল। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার সংকটও কেটে গেছে। গতকাল বিকালে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বাজেটে সাপোর্টের অর্থ পাঁচ বছরের মধ্যে ফেরত দিতে হয়। বাজেট সাপোর্টের প্রকল্প তো ২০ বছরের জন্য হয় না। আমরা সতর্ক আছি। আইএমএফ টাকা দিলেই আমরা নেব না। আমরা তো ঋণের বোঝা নিতে চাই না। আমি যদি ঋণ নিতে থাকি, টাকার বিনিময় হার কমে গেলে আমার যেখানে ৩ বিলিয়ন ডলার শোধ করার কথা, পরে ওটা ৫ বিলিয়ন ডলার হয়ে যাবে। তখন আমার ১৬০-১৮০ টাকা করে ডলার কিনতে হবে। আমরা এসব বিষয় চিন্তাভাবনা করছি। ৯ মাস ধরে আইএমএফের টাকা পাওয়া যাচ্ছে না- সাংবাদিকের এমন এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা একটা শক্ত পদক্ষেপ নেব। পদক্ষেপ আমরা নেব, না কি তারা নেবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, না না, এটা আমরা নেব। তাদের চাকরি-বাকরি আছে তো। ইন্দোনেশিয়ায় টাকা দিতে না পেরে অনেকের চাকরি চলে গেছে। সার্বিকভাবে এখন আমরা আর আইএমএফ নির্ভরশীল না। ওই দিন চলে গেছে। তবে বিশ্বব্যাংকের প্রজেক্ট ঋণ তারা বলেছে কন্টিনিউ করবে।
তিনি বলেন, আইএমএফের দুই-একটা ইস্যু আছে যেটা মেজর না। কিছু শর্ত আছে যেগুলো আমরা পরিপালন করতে চাই না। আমরা সেসব বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে আরগুমেন্ট করেছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি অনেক ভালো। ডিসেম্বর থেকে এখন অনেক ভালো। আইএমএফ থেকে টাকা-পয়সা না নিয়েই ফরেন এক্সচেঞ্জ মার্কেট ও রিজার্ভ স্থিতিশীল আছে। এই সরকার আসার পর আমরা আইএমএফ থেকে কোনো টাকা পাইনি। তাদের বলেছি তোমাদের টাকা ছাড়াই আমরা সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীল আনতে পেরেছি। এজন্য এখন তারা যে শর্ত চাপিয়ে দেবে, সেটা বুঝতে পেরেছে। তারা বলেছে, আমরা কন্টিনিউ করছি।
তিনি আরও বলেন, এ ছাড়া প্রজেক্ট সাপোর্ট অনেক আছে। বিশ্বব্যাংক, এডিবি পাইপলাইনে আছে। এআইবি থেকে এক মিলিয়ন ডলার চেয়েছি। এনডিবি ও ইসলামি ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক থেকে সহায়তা চেয়েছি। ফলে প্রজেক্ট সাপোর্টের ব্যাপারে তেমন কোনো সমস্যা দেখছি না। তবে বাজেট সাপোর্টের বিষয়ে একটু আলোচনা চলছে। আইএমএফের অনেক শর্ত থাকে। তাই আমরা চিন্তাভাবনা করছি নিজেদের মতো করে বাজেট দিতে চেষ্টা করব।