আমেরিকার নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প খ্যাপাটে বিশ্বনেতা হিসেবে প্রথম মেয়াদে নাম কিনেছেন। দ্বিতীয় মেয়াদের শপথ গ্রহণের আগেই তিনি পানামা খাল দখলের হুমকি দিয়েছেন। মেক্সিকো ও কানাডার সঙ্গে জড়িয়েছেন বাগ্যুদ্ধে। অনেকে তাঁকে তুলনা করেন সাবেক রাশিয়ান নেতা নিকিতা ক্রুশ্চেভের সঙ্গে। তবে বোদ্ধাজনদের ধারণা, ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি-ধমকি যা-ই দিন, বিশ্ববাসীর জন্য দুর্ভোগ বয়ে আনবেন না।
অনেকেরই জানা, মিসরকে বলা হয় জামাল আবদেল নাসেরের দেশ। জীবদ্দশায় আরব বিশ্বের কণ্ঠস্বর হিসেবে বিবেচিত হতেন তিনি। আরব জাতীয়তাবাদের জনক হিসেবেও স্মরণ করা হয় এ নেতাকে। অথর্ব অযোগ্য রাজা ফারুককে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশের হাল ধরেন কর্নেল নাসের। বলা হয়, রাজপ্রাসাদে বসে মদ, নারী ও জুয়া নিয়ে মেতে থাকা ছাড়া রাজা ফারুকের কোনো যোগ্যতা ছিল না। নাসের ক্ষমতায় এসে মিসরকে শুধু রাজতন্ত্রের অভিশাপ থেকে মুক্তি দেননি, মুক্তি দেন গোলামি ও পশ্চাৎপদতার অভিশাপ থেকে। রাজা ফারুক ছিলেন ব্রিটিশ-ফরাসি সাম্রাজ্যবাদের তাঁবেদার। মিসর ছিল নামেমাত্র স্বাধীন। কলকাঠি ছিল ব্রিটিশ ও ফরাসিদের হাতে। এ দেশের আয়ের প্রধান উৎস ছিল তখন সুয়েজ খাল থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব। অথচ এ খালের মালিকানা ছিল ব্রিটিশ ও ফরাসিদের হাতে। খালের ওপর মালিকানা বজায় রাখতে মিসরে ব্রিটিশ ও ফরাসি সৈন্য মোতায়েন ছিল। যা সে দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর বিষফোড়া হিসেবে বিবেচিত হতো।
নাসের ক্ষমতায় এসে সুয়েজ খাল জাতীয়করণ করেন। ক্ষুব্ধ ব্রিটেন ও ফ্রান্স নাসেরের স্পর্ধাকে সহজে মেনে নিতে পারেনি। আরব বিশ্বের ওপর তাদের খবরদারি শেষ হয়ে যাওয়ার ভয়ে আঁতকে ওঠে তারা। ১৯৫৬ সালে ইসরায়েলকে সঙ্গে নিয়ে তারা আক্রমণ চালায় মিসরের ওপর। মিসরের পক্ষে এ হামলা রোধ করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু নাসেরের কৃতিত্বে তারা হামলার সুফলও ভোগ করতে পারেনি। নাসের সুয়েজ খাল জাতীয়করণের পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক ছিলেন। তিনি আগে থেকে বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছিলেন সোভিয়েত রাশিয়ার সঙ্গে। তখন রাশিয়ায় ক্ষমতায় ছিলেন নিকিতা ক্রুশ্চেভ। মিসরে ইঙ্গ-ফরাসি হামলার বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান তিনি। সাফ সাফ বলে দেন, মিসর থেকে ব্রিটেন ও ফ্রান্স তাদের সৈন্য না সরালে মস্কো তাতে হস্তক্ষেপ করবে। ক্রুশ্চেভের এ হুমকিতে কাজ হয়। কারণ তিনি ছিলেন কথা ও কাজে এক। ব্রিটেন ও ফ্রান্স জানত তারা সৈন্য প্রত্যাহার না করলে ক্রুশ্চেভ ঠিকই এগিয়ে আসবেন। বেঁধে যাবে আরও বড় যুদ্ধ। সবচেয়ে বড় কথা- যুক্তরাষ্ট্র মিসরের ওপর আক্রমণ মেনে নেয়নি। যা ব্রিটেন ও ফ্রান্সকে পিছু হটতে বাধ্য করে। পরাশক্তি হিসেবে ব্রিটেনের ভাবমূর্তিতে ধস নামে।
মিসরের বিপদের দিনে ক্রুশ্চেভের এ ভূমিকা নাসের কখনো ভোলেননি। তিনি সিদ্ধান্ত নেন ক্রুশ্চেভের সঙ্গে দেখা করবেন। শুরু হয় মস্কো যাওয়ার প্রস্তুতি। ১৯৬৪ সালে মস্কো সফরের আগে প্রস্তুতি নিতে গিয়েই জামাল আবদেল নাসের পড়েন কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায়। তাও এক মজার কাহিনি। নাসেরের অভ্যাস ছিল কোনো ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হওয়ার আগে তার সম্পর্কে ধারণা নেওয়া। এ উদ্দেশ্যে তথ্য ও উপাত্তের চেয়ে তিনি গুরুত্ব দিতেন সে ব্যক্তির ছবিকে। বিশেষ করে রাষ্ট্রনায়ক ও বিদেশি নেতাদের সঙ্গে দেখা করার আগে বিভিন্ন ভঙ্গিমার ফটো দেখে মন-মানসিকতা সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার চেষ্টা করতেন। ক্রুশ্চেভের সঙ্গে দেখা করার ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হয়নি। সোভিয়েত নেতার যেসব ছবি তিনি তাঁর পররাষ্ট্র দপ্তরের মাধ্যমে সংগ্রহ করেন তার একটি ছিল জাতিসংঘের। কিউবা সংকট নিয়ে তখন বিতর্ক চলছিল। সে বিতর্কে মুখোমুখি অবস্থান নেয় মস্কো ও ওয়াশিংটন। আমেরিকা কিউবায় হস্তক্ষেপ করতে চেয়েছিল। কিন্তু মস্কো পারমাণবিক অস্ত্রবাহী যুদ্ধজাহাজ পাঠানোর হুমকি দেয়। সে হুমকির কাছে কিউবা গ্রাসের ইচ্ছা ত্যাগ করতে বাধ্য হয় আমেরিকা। যাই হোক, এ নিয়ে উত্তপ্ত বিতর্কের সময় স্তম্ভিত হওয়ার মতো এক ঘটনা ঘটে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে কিউবা বিতর্ক নিয়ে ভাষণ দেওয়ার সময় এতটা হইচই শুরু হয় যে, ক্রুশ্চেভ বেশ বিরক্তিবোধ করেন। কিছুতেই তাঁর প্রতি অধিবেশনের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারছিলেন না। শেষে ক্ষুব্ধ হয়ে টেবিলে পা উঠিয়ে চাপড়ানো শুরু করেন। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শক্তির কর্ণধারের এ আচরণে স্তম্ভিত হয়ে যান বিশ্বনেতারা। পিনপতন স্তব্ধ নীরবতা নেমে আসে মুহূর্তের মধ্যে। নাসের ছবিটি দেখে ক্রুশ্চেভের মন-মানসিকতার বিশ্লেষণ করতে গিয়ে হোঁচট খেলেও তাঁর সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা ত্যাগ করেননি। দুই নেতার মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্কও ছিল বেশ উষ্ণতায় ভরা। রাশিয়া সফরকালে নাসেরকে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সে দেশের সর্বোচ্চ সম্মান ‘অর্ডার অব লেনিন’ পদকে ভূষিত হন নাসের।
কিউবান নেতা ফিদেল কাস্ত্রো বিদেশি দর্শনার্থীদের মন জয়ের জাদু জানতেন এমনটিই ভাবা হতো। তাঁর সঙ্গে যারাই দেখা করেছেন তাঁদের প্রায় সবাইকেই বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করতে পেরেছেন তিনি। বঙ্গবন্ধুকে দেখে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি হিমালয় দেখিনি, তবে শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব ও সাহসিকতায় এ মানুষটি হিমালয়।’ বিশ্বনেতাদের সঙ্গে মোলাকাতে ভেনেজুয়েলার প্রয়াত প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজ ছিলেন অনন্য গুণের অধিকারী। বাংলাদেশ সফরে এসে তিনি বিমানবন্দরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে চুমো খেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। পশ্চিমা কিংবা লাতিন কালচারের ক্ষেত্রে এটি মানানসই হলেও বাংলাদেশি নেত্রীর জন্য ছিল কিছুটা হলেও বিব্রতকর।
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানও কারও সঙ্গে পরিচিত হওয়ার আগে তার সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতেন। নাসেরের মতো প্রার্থিত ব্যক্তির ছবির প্রতি আগ্রহ না দেখালেও তথ্য-উপাত্তের দিকে তিনি বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কারও সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের আগে পূর্ব প্রস্তুতির ধার ধারতেন না। তবে তিনি ছিলেন এক অবাক গুণের অধিকারী। কারও সঙ্গে পরিচয় হলে মনের ক্যামেরায় তাঁর ছবি এঁকে রাখতে পারতেন। ২০-২৫ বছর পর দেখা হলেও পূর্ব পরিচিতির বিষয়টি স্মরণে আনতে পারতেন অনায়াসে। এমনকি নামধাম পরিচয়ও বলতে পারতেন প্রায় নির্ভুলভাবে। শেখ সাহেবের এ স্মরণশক্তিকে তাঁর রাজনৈতিক সমালোচকরাও প্রশংসা করেছেন।
সাবেক সোভিয়েত নেতাদের সঙ্গে দেখা করার ক্ষেত্রে মার্কিনসহ পশ্চিমা নেতারা স্নায়ুর চাপে ভুগতেন। প্রেসিডেন্ট রিগ্যানের সঙ্গে গর্বাচেভের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আলোচনা বিশ্ব শান্তির ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখে। রিগ্যান প্রথম জীবনে ছিলেন সিনেমার অভিনেতা। বেশ কিছু ছবিতে তিনি নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেন। তবে অভিনয় ক্ষেত্রে রিগ্যান তেমন সাফল্য দেখাতে পারেননি, যা উল্লেখ করা যায়। সম্ভবত অভিনেতা হিসেবে ততটা সফল ছিলেন না বলেই তিনি সে পেশা ত্যাগ করে রাজনীতিতে নামেন। রাজনীতির নাট্যমঞ্চে তিনি ছিলেন এক শ ভাগ সফল। কিন্তু সোভিয়েত নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে রিগ্যান এতটাই নার্ভাস বোধ করতেন যে, তা কাটিয়ে উঠতে আগে থেকে রিহার্সেল দিতেন। কীভাবে প্রতিপক্ষকে অভ্যর্থনা জানাবেন, কীভাবে কথা শুরু করবেন, এ নিয়ে দীর্ঘ চিন্তাভাবনায় ব্যস্ত থাকতেন। পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়াউল হক চেহারায় কাঠখোট্টা হলেও দর্শনার্থীদের মন জয়ে পটু ছিলেন। অতিথিদের অভ্যর্থনা ও আপ্যায়নে তিনি ফরমালিটির ধার ধারতেন না। স্বদেশিদের ওপর কড়া শাসনের কুখ্যাতি অর্জন করলেও বিদেশিদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে এ জেনারেল ছিলেন সফল। পাকিস্তান সফররত বিদেশি রাজনৈতিক নেতা ও কূটনীতিকদের সঙ্গে তাঁর আচরণ ছিল আন্তরিক। বাংলাদেশের এক রাজনৈতিক নেত্রীর অভিজ্ঞতায় তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। জিয়াউল হক এ নেত্রীকে তাঁর রেস্ট হাউসে পৌঁছে দিতে পুত্র এজাজুল হককে গাড়ি ড্রাইভের নির্দেশ দেন।
পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সময়জ্ঞান ছিল টনটনে। প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান একবার তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ফিরে আসেন একরকম অপমানিত হয়ে। মিনিটখানেক বিলম্ব হওয়ার গাফিলতিকে মেনে নেননি জিন্নাহ সাহেব। শোনা যায়, নেতার এ ‘স্বেচ্ছাচারী’ মনোভাবে লিয়াকত আলী খান ক্ষুব্ধ হন। জিন্নাহকে একরকম বিনা চিকিৎসায় মরতে হয়। একবার অসুস্থ অবস্থায় স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে করাচিতে আনার সময় বিমানবন্দরে তাঁকে রিসিভ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী দূরের কথা কোনো সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন না। প্রায় অচেতন জিন্নাহকে বিমান থেকে নামিয়ে বিমানবন্দরের মাটিতে ফেলে রাখা হয়। তাঁর শরীরের ওপর পিঁপড়ে উঠে গেলেও তা দেখার কেউ ছিল না। অথচ আমৃত্যু তিনি ছিলেন পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল। স্বাধীন পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা তো বটেই। জিন্নাহর বোনের ক্ষোভ এ নিষ্ঠুর আচরণের পেছনে লিয়াকত আলী খানের ইশারা ছিল।
চীন-ভারত সম্পর্ককে আর যাই হোক বন্ধুত্বপূর্ণ বলে ভাবা কঠিন। অথচ একসময় ভারত ছিল চীনের সবচেয়ে বড় বন্ধু। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি। ভারতের প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবস। এ উপলক্ষে রাজধানী বেইজিংয়ের ভারতীয় দূতাবাসে অভ্যর্থনার আয়োজন করা হয়। সে অনুষ্ঠানে চীনের সর্বোচ্চ নেতা মাও সে তুং প্রটোকল ভেঙে সস্ত্রীক উপস্থিত হন। এ ধরনের অনুষ্ঠানে বড়জোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যোগদানই যথেষ্ট। কিন্তু ভারতের প্রতি বন্ধুত্বের গভীরতা প্রমাণে চীনের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নেতা তাতে উপস্থিত হন। ১৯৫০ সালের ২ অক্টোবর। কোরিয়া যুদ্ধ তখন তুঙ্গে। এ যুদ্ধে দক্ষিণ কোরিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘকে শিখণ্ডি বানিয়ে আরও ২০টি দেশকে সঙ্গে নিয়ে তারা উত্তর কোরিয়ার অগ্রাভিযান বন্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। চীন সাফ সাফ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র দুই কোরিয়ার অস্থায়ী সীমারেখা অতিক্রমের চেষ্টা করলেই তারা উত্তর কোরিয়ার পক্ষে যুদ্ধে নামবে। এ সিদ্ধান্তটি প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই বন্ধু প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে জানাতে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে রাতে ডেকে পাঠান। যাতে ভারতের পক্ষ থেকে চীনের মনোভাব যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়ে দেওয়া হয়। রাষ্ট্রদূত কে এম পানিক্কর চীনা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়ে স্তম্ভিত হয়ে যান। দেখেন প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে বাসভবনের আঙিনায় দাঁড়িয়ে আছেন। তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামাকে ভারতে আশ্রয় দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই দেশের বন্ধুত্বে ফাটল ধরে। সে ফাটল কোনো দিন জোড়া লাগেনি।
বিদেশি নেতাদের সঙ্গে মোলাকাতে মাও সে তুংয়ের আন্তরিকতার তুলনা খুঁজে পাওয়া ভার। আমাদের অন্যতম জাতীয় নেতা মওলানা ভাসানী চীন সফর করেন সেই পাকিস্তান আমলে। চীনের সর্বোচ্চ নেতা মাও সে তুংয়ের সঙ্গে সাক্ষাতেরও সুযোগ পান তিনি। মওলানা ভাসানীকে একজন রাষ্ট্রপ্রধানের মতোই বরণ করেন চীনের সর্বোচ্চ নেতা। রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুও ছিলেন অতুলনীয়। ১৯৫৮ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় ছিটমহল বিনিময়ের চুক্তি। এ উপলক্ষে দিল্লিতে যান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ফিরোজ খান নূন। মিস্টার ও মিসেস নূন দেশে ফেরার সময় ঘটে এক বিব্রতকর ঘটনা। সিঁড়ি বেয়ে বিমানে ওঠার সময় হঠাৎ পা ফসকে পড়ে যায় ভিকারুননিসা নূনের এক পায়ের হাইহিল জুতা। সবাইকে অবাক করে নেহরু নিজে হাইহিল জুতা কুড়িয়ে বিমানের সিঁড়ির ওপরে বিব্রত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা ম্যাডাম নূনের হাতে তুলে দেন। সৌজন্যবোধ হয়তো একেই বলে।
লেখক : সিনিয়র সহকারী সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন
ইমেইল : [email protected]