শীতের শুরুতেই চলনবিলে বিশেষ ভাবে তৈরি কিল্লা ঘরের ফাঁদে বক দিয়ে বক শিকারে মেতেছে পাখি শিকারিরা। আর পাতা সেই ফাঁদে পাখি শিকারের সময় হাতে নাতে আটক করে দুই পেশাদার শিকারিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুই মাসের করে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ৯টায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সিংড়ার ইউএনও মাজহারুল ইসলাম এই দন্ডাদেশ দেন। এর আগে কাঁকডাকা ভোরে প্রশাসনের নির্দেশে সিংড়ার চলনবিলের ইন্দ্রাসন মাঠ থেকে দুই পেশাদার পাখি শিকারিকে আটক করেন চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সদস্যরা। দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, পাশবর্তী তাড়াশ থানার পলাশী গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে কবির প্রামাণিক (৪৫) ও একই গ্রামের মৃত আহসান হাবিব এর ছেলে জান মাহমুদ (৩৫)।
অভিযানে বিশেষ ভাবে তৈরি কিল্লা ঘর ও কারেন্ট জালের ফাঁদ থেকে উদ্ধারকৃত শতাধিক বক, শালিক সহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি অবমুক্ত করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম ও সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমিনুজ্জামান।
উপস্থিত ছিলেন চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ, যুগ্ম সম্পাদক হাসিবুল হাসান শিমুল, পরিবেশ কর্মী এমএ করিম প্রমূখ। পরে জব্দকৃত ফাঁদগুলো ধ্বংস ও বিলের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এলাকায় সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয়।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জানান, বর্ষার শেষে ও শীতের শুরুতে চলনবিলে ধান ক্ষেতে বিশেষ ভাবে তৈরি ফাঁদ কিল্লা ঘর ও কারেন্ট জালে পাখি শিকারে মেতে উঠে লোভী শিকারিরা। এই বিলের পাখি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় তারা দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার ভোরে ইন্দ্রাসন ও মাগুড়া এলাকায় ধান ক্ষেতে পাতা কিল্লা ঘর ও জাল ফাঁদ থেকে ১০৫ টি বক ও শালিক পাখি উদ্ধার করে অবমুক্ত করেন। এসময় দুই কিশোর শিকারিকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় আর দুই পেশাদার পাখি শিকারিকে প্রশাসনের মাধ্যমে কারাদন্ড প্রদান করা হয়।
ইউএনও মাজহারুল ইসলাম বলেন, এই বিলের পাখি রক্ষায় চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সদস্যরা খুবই সক্রিয়। পাশাপাশি প্রশাসনও সব সময়ই তৎপর রয়েছে। কোন অপরাধ সংগঠিত হলেই সেখানে ছুটে যাচ্ছেন এবং যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
বিডি প্রতিদিন/এএম