কক্সবাজারের টেকনাফের গহীন পাহাড়ি অরণ্য থেকে মুক্তিপণ আদায় ও মালয়েশিয়ায় পাচারের উদ্দেশ্যে অপহৃত ২২ জন ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১৫)।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাতিয়ারঘোনা এলাকার করাচিপাড়া পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়। র্যাব-১৫-এর সহকারী পরিচালক আ. ম. ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, উদ্ধারকৃতদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি নাগরিক এবং ২১ জন রোহিঙ্গা রয়েছেন। রোহিঙ্গাদের মধ্যে ১০ জন পুরুষ, ৪ জন নারী ও ৭ জন শিশু।
র্যাব জানায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সিপিসি-১ টেকনাফ ক্যাম্পের একটি বিশেষ আভিযানিক দল হাতিয়ারঘোনা করাচিপাড়ার দুর্গম পাহাড়ে প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী রুদ্ধশ্বাস অভিযান চালায়। এসময় মুক্তিপণ আদায় ও জোরপূর্বক মালয়েশিয়ায় পাচারের উদ্দেশ্যে আটক ২২ জন ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়।
অভিযানের সময় পাচারকারী চক্রের সদস্যরা র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। তবে ভিকটিমদের জবানবন্দি, গোয়েন্দা তথ্য ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার ভিত্তিতে পাচারকারী চক্রের সদস্যদের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
পালিয়ে যাওয়া পাচারকারী চক্রের সদস্যরা হলেন- লেঙ্গুর বিল করাচিপাড়া হাতিয়ারঘোনার মো. আহমদের ছেলে মো. খলিল (৪৫), তার ছেলে রাশেদুল ইসলাম (২০), স্ত্রী জাহানারা (৪১), বশর হাজীর ছেলে আবদুল্লাহ মেম্বার (৩৫), কবির সদরের ছেলে আবদুল (২৬), আবদুস সালামের ছেলে আবদুর রশিদ (২৮), কবির সদরের আরেক ছেলে শহিদুল্লাহ (২২), মো. সোনা আলীর ছেলে ওসমান গণি (২৬) এবং আহমদ মিয়ার ছেলে ইয়াকুব (৩৫)।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ভিকটিম মোবারক (১৭) জানান, গত ১৩ অক্টোবর বিকাল ৩টার দিকে কক্সবাজার সদরের কলাতলী এলাকা থেকে পলাতক ও অজ্ঞাতনামা আসামিরা তাকে সিএনজিযোগে অপহরণ করে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে মারধর করে পরিবারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
তিনি আরও জানান, তার সঙ্গে উদ্ধার হওয়া অন্যান্য রোহিঙ্গাদেরও বিভিন্ন ক্যাম্প ও পথ থেকে অপহরণ করা হয়। মুক্তিপণ না দিলে তাদের মালয়েশিয়ায় পাচারের হুমকি দেওয়া হয়। মুক্তিপণ না পেয়ে পাচারকারীরা ভিকটিমদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালায়, কারও শরীরে সিগারেটের আগুনে পোড়ানো হয়, কারও আঙুলের নখ প্লায়ার্স দিয়ে তুলে ফেলা হয়।
র্যাব জানায়, অপহৃতদের সবাই বর্তমানে নিরাপদে রয়েছে এবং চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ঘটনায় টেকনাফ মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ