নাটোরের সিংড়া উপজেলার ইটালি ইউনিয়নের শালমারা এলাকায় কোমর পানিতে ভিজে প্রতিদিন স্কুল ও মাদ্রাসায় যাতায়াত করছে শতাধিক শিশু শিক্ষার্থী। টানা বর্ষণে সৃষ্টি হওয়া জলাবদ্ধতার কারণে শালমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শালমারা ধামাইচ ইসলামিয়া সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে অভিভাবক, শিক্ষক এবং এলাকাবাসীকেও। কোমর পানি পেরিয়ে প্রতিদিন শ্রেণিকক্ষে পৌঁছাতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের জামাকাপড়, বই-খাতা ভিজে যাচ্ছে, ভিজছে স্কুলব্যাগও। ফলে তাদের শারীরিক স্বাস্থ্য ও শিক্ষা কার্যক্রম উভয়ই ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ছোটদের বিশেষ করে শিশু শ্রেণি ও প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের অনেকেই হাঁটতে না পেরে পানিতে পড়ে যাচ্ছে, কেউ কেউ আবার ভেজা কাপড়েই ক্লাস করছে। স্কুলের দপ্তরি কাম প্রহরী হাবিল শেখ ও কিছু সচেতন অভিভাবক শিক্ষার্থীদের কোলে করে স্কুলে আনা-নেওয়া করছেন।
একজন অভিভাবক রহিমা বেগম বলেন, 'গত ১৫ দিন ধরে রাস্তায় কোমর পানি জমে আছে। আমাদের ছেলেমেয়েদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে পাঠাতে হচ্ছে। যদি এই রাস্তাটা ২-৩ ফুট উঁচু করা যেত, তাহলে এত কষ্ট হতো না।'
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, বহুদিন ধরেই রাস্তার এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি। অথচ এটিই এলাকার একমাত্র চলাচলের রাস্তা। প্রতিবার বর্ষায় একই চিত্র দেখা গেলেও উপযুক্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। পানি নামার পরও দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
শালমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রাব্বানী বলেন, 'স্কুলে যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটি এতটাই নিচু যে সামান্য বৃষ্টিতেই ডুবে যায়। বর্ষার শুরুতেই পুরো রাস্তায় কোমর পানি জমে আছে। এতে শুধু যাতায়াতই না, শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্কুলে আসার আগ্রহও কমে যাচ্ছে। শ্রেণি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। আমরা দ্রুত রাস্তাটি অন্তত ২-৩ ফুট উঁচু করে সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।'
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন,'বিষয়টি আগে জানা ছিল না।গণমাধ্যমের মাধ্যমে জেনেছি। যদি এলাকাবাসী বা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে আবেদন করেন, তাহলে সরেজমিনে গিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
বিডি প্রতিদিন/মুসা