জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু ঘিরে দেশে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনায় বসার জন্য প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বান ইতিবাচক বলে উল্লেখ করেছেন জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের। একই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে অন্যরা সাড়া দিলে জামায়াতে ইসলামীও আলোচনায় বসতে রাজি বলে জানিয়েছেন তিনি। গতকাল আট দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জামায়াতের এ নেতা। এ সময় দলগুলোর নেতারা আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন। এদিকে নির্বাচনের আগে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ে প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপিসহ গণমিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন দলগুলোর নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘উচ্চকক্ষে পিআরের ব্যাপারে আট দলের সবাই, জনগণ ও সরকার একমত। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে এ চাওয়া পূরণ হবে না। প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে অন্যরা সাড়া দিলে আমরাও আলোচনা বসতে রাজি।’ তিনি আরও বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ যদি কিছু না করে আমাদের (রাজনৈতিক দলগুলো) ওপরই ছেড়ে দেয়, তবে রেফারির দায়িত্ব পালন করবে কে? রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনা করে একমত হওয়ার বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। কিন্তু এ বিষয়ে সরকারকে রেফারির ভূমিকা পালন করতে হবে।’ জুলাই সনদ ও গণভোট নিয়ে বিএনপির একেক নেতা একেক বক্তব্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের দিনে গণভোট হলে সেই ভোটের কোনো মূল্যায়ন থাকবে না।’ সনদের জন্য গণভোট অপরিহার্য বলেও জানান তিনি।
এদিকে, যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মো. মামুনুল হক বলেন, ‘আমরা যে পাঁচ দফা নিয়ে আন্দোলনে আছি তা অব্যাহত থাকবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে জুলাই সনদের টেকসই আইনি ভিত্তির লক্ষ্যে অবশ্যই গণভোট হতে হবে। সংশোধিত আরপিও আর সংশোধনের সুযোগ নেই।’ আগামী বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিতে গণমিছিল করা হবে। দাবি আদায় না হলে আগামী ১১ নভেম্বর বিক্ষোভ সমাবেশ করা হবে বলেও জানান তিনি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, ‘জুলাই সনদ আইনি ভিত্তি না পেলে পরবর্তী নির্বাচন বৈধতা পাবে না। একই দিনে গণভোট ও নির্বাচন হলে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন হুমকির মুখে পড়বে। একই দিনে গণভোট ও নির্বাচনের ইতিহাস নেই।’ সংবাদ সম্মেলেন এই পাঁচ দফার কিছু বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানানো হয়।
অগ্রাধিকার দেওয়া সেই তিন বিষয় হলো অনতিবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোটের আয়োজন ও সংশোধিত আরপিওর খসড়ায় আর কোনো পরিবর্তন না আনা। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব ইউনুছ আহমাদ, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদিক হক্কানী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইযহার, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, জাগপার সহসভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান প্রমুখ।