ঈদের ছুটিতে সোনারগাঁয়ের বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে ছিল দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। রবিবার সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জ শহর ও এর আশপাশের এলাকা এবং রাজধানী ঢাকা থেকে মানুষ পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসেন। তাদের মধ্যে শিশু-কিশোরদের সরব উপস্থিতি ছিল।
দর্শনার্থীদের আগ্রহের শীর্ষে ছিল সোনারগাঁ পানাম সিটি, লোক কারুশিল্প ফাউন্ডেশন (জাদুঘর), বাংলার তাজমহল। ঈদের দ্বিতীয় দিন রবিবার দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে সোনারগাঁ জাদুঘর ও পানাম সিটি প্রাঙ্গণ।
এদিকে জাদুঘরসহ কয়েকটি বিনোদনকেন্দ্রে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের চাপে বিনোদন কেন্দ্রের আশপাশের সড়কগুলোতে কিছুটা যানজট সৃষ্টি হলেও যানজট উপেক্ষা করেই তাদের উপস্থিতি ছিল দৃষ্টিনন্দন। অনেককে গাড়ি ছেড়ে পায়ে হেঁটে বিনোদন কেন্দ্রে ঢুকতে দেখা গেছে।
পরিবার-পরিজন নিয়ে নির্মল প্রকৃতির সঙ্গে কিছু সময় আনন্দে কাটিয়ে খুশি আগত দর্শনার্থীরা। সোনারগাঁ জাদুঘর, পানাম সিটি, বাংলার তাজমহল ছাড়াও গিয়াস উদ্দিন আযম শাহের মাজার, লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রম, জ্যোতিবসুর বাড়ি, কাইকারটেক ব্রিজ ও অলিপুরা ব্রিজে বিপুল পরিমাণ দর্শনার্থীর আগমন ঘটে।
শুধু তাই নয়, সোনারগাঁয়ের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মেঘনা নদীতে গিয়েও একই চিত্র দেখা গেছে। দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখার পর বিকেলে উপজেলার বৈদ্যেরবাজার নৌ-ঘাট থেকে অনেককেই পরিবার-পরিজন নিয়ে মেঘনা নদীতে ইঞ্জিনচালিত নৌকা দিয়ে ঘুরতে দেখা যায়, যেন নদীতে কচুরিপানার মতো নৌকার বিছানা!
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা দীপঙ্কর লাহিড়ী বলেন, বিগত ১৫ বছর পর শ্রী শ্রী বাবা লোকনাথের আশ্রমে এসেছি। ঈদুল আজহা উপলক্ষে অফিস থেকে ছুটি পেয়েছি তাই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সোনারগাঁয়ের অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখছি। মুঘল আমলের প্রাচীন নিদর্শনের অসংখ্য নিদর্শন রয়েছে সোনারগাঁয়ে। নতুন প্রজন্মের শিক্ষার জন্য হলেও সোনারগাঁয়ে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে পরিবার-পরিজন নিয়ে মাঝেমধ্যে ঘুরতে আসা উচিত।
কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে পানামাসিটিতে ঘুরতে আসা মাহমুদা আক্তার মুনা বলেন, কোরবানির ঈদে আগে তেমন কোথাও যাওয়া হয়নি। কিন্তু এবার আমার স্বামী বিদেশ থেকে ঈদ উপলক্ষে বাড়িতে এসেছেন। জীবনের প্রথম সোনারগাঁয়ে ঘুরতে আসলাম। আমি মনে করি পুরো বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্যে'র ধারক-বাহক এই সোনারগাঁ। সোনারগাঁয়ের দিকে সরকারের বিশেষ দৃষ্টি রাখা উচিত।
পানাম সিটি ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সহকারী কাস্টডিয়ান সিয়াম চৌধুরী বলেন, ঈদের ছুটিতে আশানুরূপ দর্শনার্থীদের সমাগম হয়েছে। দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ হাজারো দর্শনার্থী সোনারগাঁয়ের আদিরূপ উপভোগ করতে পানাম সিটিতে ভিড় জমিয়েছেন। পর্যটকদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য এখানে পর্যাপ্ত আনসার ও ট্যুরিস্ট পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান বলেন, সোনারগাঁয়ে বেশ কিছু পর্যটনকেন্দ্র তৈরি হওয়ায় পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত সোনারগাঁ জাদুঘর ও পানাম সিটিসহ অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্রগুলো। দর্শনীয় স্থানগুলোতে পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে কর্তৃপক্ষের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি পুলিশ, আনসার ও ট্যুরিস্ট পুলিশদের মাধ্যমে অতিরিক্ত নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম