‘ছেলে আজ বেঁচে থাকলে সে-ও এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিত। হয়তো ভালো ফলও করত।’ বৃহস্পতিবার এসএসসির ফল প্রকাশের পর আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন জুলাই গণ অভ্যুত্থানে শহীদ আহাদুন নুরের বাবা মজিবুর রহমান। ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১৮ জুন নিখোঁজ হয়েছিলেন আহাদুন নুর। ২০ জুন ঢাকা মেডিকেলের স্টোর রুমে তার লাশ পাওয়া গিয়েছিল।
জানা যায়, আহাদুন নুর (১৬) রাজধানীর পূর্ব বাড্ডার ইউসেপ হাজী সিকান্দার আলী টেকনিক্যাল স্কুল থেকে ‘জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্ক’ বিষয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। এক যুগ ধরে বাবা-মায়ের সঙ্গে ঢাকায় বসবাস করতেন। পড়ার পাশাপাশি বাবার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও বসতেন তিনি। এসএসসির প্রস্তুতি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছিলেন। তার দেওয়া হয়নি বোর্ড পরীক্ষা। আহাদুন নুরের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে। মজিবুর রহমান বলেন, গত বছরের ১৮ জুলাই আহাদুন নুর নিখোঁজ হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তখন তীব্র। চারদিকে গুলি-আর্তনাদ। পরদিন রাতে টিভিতে খবর দেখি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুটি অজ্ঞাত লাশ আছে। ২০ জুন অনেক চেষ্টার পর জরুরি বিভাগের স্টোর রুমে গিয়ে দেখি ২০-২৫টি লাশ।
সেখানে আমার আহাদুনের লাশও ছিল। বাবা হয়ে ছেলের লাশ কাঁধে নেওয়া যে কী কষ্ট, বোঝানো যাবে না। আজ (১০ জুলাই ২০২৫) এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট হয়েছে। বেঁচে থাকলে আমার ছেলেও পরীক্ষা দিয়ে হয়ত বা ভালো ফল করত।