বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশনের (বাজুস) প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডায়মন্ড এন্ড ডিভাসের স্বত্বাধিকারী এনামুল হক খান। এ ছাড়া সানন্দা জুয়েলার্স (প্রা.) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রনজিৎ ঘোষ সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং আপন ডায়মন্ড হাউজের স্বত্বাধিকারী আজাদ আহমেদ, জড়োয়া হাউজ (প্রা.) লিমিটেডের পরিচালক অভি রায় ও জেসিএক্স গোল্ড এন্ড ডায়মন্ডের স্বত্বাধিকারী মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন নিউ ফেন্সী জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী অমিত ঘোষ। ৩৫ সদস্যের বাজুস পরিচালনা পর্ষদের সবাই বিনা প্রতিদ¦ন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এনামুল হক খান আগেও একবার বাজুসের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ইকবাল হোসেন চৌধুরী এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক ও সার্ক চেম্বারের পরিচালক। গতকাল বাজুসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংগঠনটির ২০২৫-২৭ মেয়াদের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসরিন ফাতেমা আউয়াল। বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেলের সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য দেন বাজুস নির্বাচন বোর্ডের সদস্য এস. কে. মজিবুর রহমান ইকবাল ও মো. রকিবুল আলম দীপু। এ ছাড়া বক্তব্য দেন বাজুসের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট গুলজার আহমেদ, নবনির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের প্রেসিডেন্ট এনামুল হক খান, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রনজিৎ ঘোষ, ভাইস প্রেসিডেন্ট আজাদ আহমেদ, অভি রায় ও ইকবাল হোসেন চৌধুরী, বাজুসের বর্তমান কমিটির সহসভাপতি এম. এ. হান্নান আজাদ ও কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট এনামুল হক খান বলেন, বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর তাঁর দক্ষতা ও নিষ্ঠা দিয়ে দেশবিদেশে বাজুসের পরিচিতি ঘটিয়েছেন। বাজুসের উন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। তাঁর চেষ্টায় বাজুস আজ প্রায় ৪০ হাজার সদস্যের পরিবার। বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের উন্নয়ন কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষায় নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করবেন। ফলাফল ঘোষণাকালে নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসরিন ফাতেমা আউয়াল বলেন, নবনির্বাচিত কমিটি দেশের জুয়েলারি শিল্পের সমস্যাগুলো সমাধানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, যাঁরা জুয়েলারি ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত তাঁদের এ কমিটি আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে পরিচিতি এবং বাংলাদেশের পণ্য সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হবে। ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট গুলজার আহমেদ বলেন, বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে বাজুস সুসংগঠিত ও সর্ববৃহৎ সংগঠনে রূপান্তরিত হয়েছে। জুয়েলারি শিল্পের উন্নয়নের জন্য বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর ব্যবসায়ীদের জুয়েলারি ফ্যাক্টরি করার কথা বলে আসছেন। এ ধারাবাহিকায় বাংলাদেশে এখন অনেক জুয়েলারি ফ্যাক্টরি গড়ে উঠেছে।
নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের জুয়েলারি শিল্প আমাদের ঐতিহ্যের অংশ। আজ এটি দেশের অর্থনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ খাতে পরিণত হয়েছে। দেশে বর্তমানে প্রায় ৪০ হাজার জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান এবং ১০ থেকে ১২ লাখ কারিগর এ শিল্পে কাজ করছেন। আমাদের দেশে সোনার বার্ষিক চাহিদা সরকারি হিসাবে ৩০ থেকে ৪০ টন, আর বেসরকারি হিসাবে ৭০ থেকে ৯০ টন। এ চাহিদার বড় অংশই আসে পুনর্ব্যবহৃত সোনা থেকে। আমাদের দেশে প্রায় ৪ লাখ কোটি টাকার সোনার ও ৩০ হাজার কোটি টাকার হীরার বাজার রয়েছে। এত বড় বাজার থাকা সত্ত্বেও উচ্চ কর-শুল্ক, জটিল আমদানি প্রক্রিয়া এবং আধুনিক উৎপাদন অবকাঠামোর ঘাটতির কারণে এ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব এখনো প্রত্যাশিত নয়। প্রাথমিক কাঁচামাল ও মেশিনারিজ আমদানিতে ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক উৎপাদন ব্যয় বাড়িয়ে দিচ্ছে, ফলে আধুনিক ফ্যাক্টরি স্থাপনও ধীরগতিতে এগোচ্ছে।
নির্বাচিত ২৯ জন পরিচালক হলেন মো. মিলন মিয়া (মিলন জুয়েলার্স), পবন কুমার আগরওয়াল (গীতাঞ্জলী জুয়েলার্স), তানভীর রহমান (নিউ আল ইসলাম জুয়েলার্স), মো. লিটন হাওলাদার (নিউ সোনারতরী জুয়েলার্স), বাবলু দত্ত (লিলি জুয়েলার্স), গনেশ দেবনাথ (গৌরব জুয়েলার্স), আশিস কুমার মন্ডল (মুক্তা জুয়েলার্স), মিজানুর রহমান (ডায়মন্ড সিলেকশন), বিকাশ ঘোষ (বিপুল জুয়েলার্স), সুমন চন্দ্র দে (কুঞ্জ জুয়েলার্স), মোস্তফা কামাল (আলভী জুয়েলার্স), ধনঞ্জয় সাহা (বিপুল) (নিউ সানন্দা জুয়েলার্স), শ্রীবাস রায় (ডি ডামাস দি আর্ট অব জুয়েলারী), মো. আলী হোসেন (ড্রিমস ইন্সট্রুমেন্ট টেকনোলজি), মো. রুবেল (রিজভী জুয়েলার্স), মো. নয়ন চৌধুরী (আনন্দ জুয়েলার্স), মো. ছালাম (রিয়া জুয়েলার্স), ফাহাদ কামাল লিংকন (এস জি এল ল্যাব বাংলাদেশ লি.), গৌতম ঘোষ (আফতাব জুয়েলার্স), মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম (মনিমালা জুয়েলার্স), মো. তারেকুল ইসলাম চৌধুরী (পরমা জুয়েলার্স), আবু নাসের মোহাম্মদ আবদুল্লাহ (রোজা জুয়েলার্স), মো. রফিকুল ইসলাম (আশরাফ জুয়েলার্স), সৌমেন সাহা (ট্রাস্ট গোল্ড এন্ড ডায়মন্ড), আককাছ আলী (মদিনা জুয়েলার্স), মোহাম্মদ মোরশেদ আলম (রিগেল স্কাই গোল্ড এন্ড জুয়েলারী), শাওন আহম্মেদ চৌধুরী (আল বারাকা জুয়েলার্স-২), মো. নাজমুল হুদা লতিফ (আদর জুয়েলার্স) এবং পলাশ কুমার সাহা (আমন্ত্রণ জুয়েলার্স)।