বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী বলেছেন, গণমাধ্যমের প্রতি জনগণের আস্থা ফেরাতে হলে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে হবে। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘ফ্যাসিবাদ আমলের গণমাধ্যম পরিস্থিতি : আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যাপক ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী। সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন প্রমুখ।
বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী বলেন, সাংবাদিকতা হচ্ছে রাষ্ট্রের অন্যতম একটা ইন্দ্রিয়, যার মাধ্যমে দেশের মানুষ রাষ্ট্র সম্পর্কে ও দুনিয়া সম্পর্কে ধারণা নেয়। সুশাসন নিশ্চিত করতে সংবাদমাধ্যম পাহারাদারের ভূমিকা পালন করে। এজন্য গণমাধ্যমকে বলা হয় রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ, আর সাংবাদিকদের বলা হয় অতন্দ্র প্রহরী। কিন্তু বিগত সরকার সেটা পালন করতে দেয়নি। আর আমরা সাংবাদিকরাও হাসিনা সরকারের পোষা কুকুর হয়ে গিয়েছিলাম।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকদের দালালির কারণে মাহমুদুর রহমান প্রতিবাদ গড়ে তুলেছিলেন। সেদিন যদি সবাই পাশে দাঁড়াতেন তাহলে আজকে এতগুলো মানুষ খুন হতো না, আমাদের সন্তানদের রক্তে ঢাকার রাজপথ লাল হতো না।
শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট থেকে মহাফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচার বানানোর পেছনে বহুলাংশে আমাদের সাংবাদিকরা দায়ী ছিল। তিনি বলেন, আজকে কোনো এক পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে কিছু সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বলুন তো সাংবাদিকরা অপরাধ করলে অপরাধ নয়, অন্যায় করলে অন্যায় নয়। যেসব সাংবাদিক ফ্যাসিবাদ সরকারকে সহায়তা করেছে, বলেছে এই ছাত্ররা জামায়াত-শিবির, তাদের গুলি করেন। তাদের আমি সাংবাদিক বলি কীভাবে, তাদের আমি কেবল খুনি বলতে চাই। তবে গণ হারে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা আমরা মেনে নিতে পারি না।
বিএফইউজে মহাসচিব বলেন, সাংবাদিকদের জন্য নবম ওয়েজবোর্ড দরকার। ক্ষুধার্ত রেখে সাংবাদিকদের দিয়ে কাজ করানো যাবে না। বিশেষ করে অধিকাংশ মফস্বল সাংবাদিকদের বেতন দেয় না বড় বড় মিডিয়াগুলো। আপনারা পত্রিকা চালাবেন, মালিক হবেন, ব্যবসা করবেন। সাংবাদিকদের বেতন দেবেন না- সেটা তো হতে পারে না। পত্রিকা চালাতে হলে সাংবাদিকদের বেতন দিতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের কোনো অবস্থানে আপস করা চলবে না। সবচেয়ে বেশি যা দরকার গণমাধ্যমের প্রতি যে জনগণের অনাস্থা তৈরি হয়েছে তা ফিরিয়ে আনা। তা সম্ভব একমাত্র বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে। এজন্য তোষামোদ, আত্মসমর্পণ সেটা বন্ধ করে যদি সত্য কথাটা লিখি তাহলে জনগণের আস্থা ফিরে আসবে।