দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ৪৩টি কলেজের কেউ পাশ করেনি। এছাড়া ২১টি কলেজ থেকে অংশ নেয়া শতভাগ শিক্ষার্থী পাশ করেছেন। প্রকাশিত ফলাফলে পাশের হার ও জিপিএ-৫ এ ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন মেয়েরা।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড মিলনায়তনে ফলাফল ঘোষণা করেন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মহা. তৌহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, এবার পাশের হার ৫৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ। যা গেল সাত বছরের তুলনায় কম।
ঘোষিত ফলাফলে বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এবার দিনাজপুর বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৮ হাজার ৬৭৯জন। এর মধ্যে উপস্থিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক লাখ ৫ হাজার ৮৯১ জন। অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাশ করেছেন ৬০ হাজার ৫৮২ শিক্ষার্থী।
এর মধ্যে ছাত্র পাশের হার ৫২ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং ছাত্রী পাশের হার ৬১ দশমিক ৯২ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬ হাজার ২৬০ জন শিক্ষার্থী। অন্যদিকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩ হাজার ৪৮১ জন ছাত্রী এবং ২ হাজার ৭৭৪ জন ছাত্র জিপিএ-৫ পেয়েছেন। বিভাগের ৮ জেলায় ৬৬৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২১৩ টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বহিস্কৃত হয়েছেন ২৭ জন শিক্ষার্থী।
বরাবরের ন্যায় জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছে রংপুর জেলা। এই জেলায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২ হাজার ৬২৬ জন। জিপিএ-৫ এর তলানীতে রয়েছে পঞ্চগড় জেলা। জেলায় এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১১৩ জন শিক্ষার্থী।
এরপর রয়েছে দিনাজপুর জেলা। এই জেলায় জিপিএ-৫ পেয়েছে এক হাজার ১৩১ জন। এছাড়া গাইবান্ধায় ৫৭১ জন, নীলফামারীতে ৯৮১ জন, কুড়িগ্রামে ৩৩৫ জন, লালমনিরহাটে ১৯৬ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ৩০৭ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন।
এছাড়া পাশের হারেও এগিয়ে রয়েছে রংপুরের শীর্ষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এসব প্রতিষ্ঠানে বেশিরভাগ পাসের হার শতকরা ৯০ শতাংশ। সাফল্যের মধ্যে রংপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে ৪৬ জন পরীক্ষা অংশ নিয়ে সবাই জিপিএ-৫ পেয়েছে। এরপর রংপুর সরকারী কলেজে ১ হাজার ৩২৭ জন অংশ নিয়ে পাস করেছে ১ হাজার ২৫৬ জন।
জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৪৯ জন। কারমাইকেল কলেজে ৯৫০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৭৯৮ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৪১ জন। রংপুর সিটি কলেজে ৬৯৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৫৬৩ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯৬ জন। রংপুর ক্যান্টটমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৮৮৮ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৮৮৪ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৫৬ জন।
দি মিলেনিয়াম স্টারস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১৫০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ১৪৯ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮৮ জন। লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে অংশ নেয়া ৭৯৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ৭৮১ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৮২ জন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষকদের আন্তরিক পাঠদান ও দিক-নির্দেশনা এবং অভিভাবকদের সহযোগিতায় ফলাফল ভালো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে দিনাজপুর বোর্ডে পাশের হার ছিল ৭১ দশমিক ৭৮ শতাংশ, ২০২০ সালে ১০০ শতাংশ, ২০২১ সালে ৯২ দশমিক ৪৩ শতাংশ, ২০২২ সালে ৭১ দশমিক ৮ শতাংশ, ২০২৩ সালে পাশের হার ছিল ৭৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সবশেষ ২০২৪ সালে পাশে হার ছিল ৬৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
বিডি প্রতিদিন/কামাল