জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্মরণে সর্বস্তরের নাগরিক অংশগ্রহণে গণমিনার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে 'গণমিনার বাস্তবায়ন কমিটি। গণমিনারের স্থান হিসেবে বীর উত্তম মেজর জেনারেল আজিজুর রহমান ও বিজয় সরণির মধ্যবর্তী সবুজ চত্বরকে নির্ধারণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে একটি সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানায় গণমিনার বাস্তবায়ন কমিটি।
মিনার নির্মাণ ছাড়াও গণমিনার বাস্তবায়ন কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে বেশ কিছু পরিকল্পনা ও কর্মসূচি গ্রহণের কথা জানায়। এর মধ্যে রয়েছে- ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন গণমিনার নির্মাণের জন্য জমি বরাদ্দ, অর্থ ও প্রকৌশল সহযোগিতার বিষয়ে সম্মত হয়েছে; জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে জাতিসংঘ স্বীকৃত ১৪০০ শহীদের নাম ও পরিচিতি খোদাই করে প্রস্তাবিত গণমিনারে সংরক্ষণ করা হবে; এই ভূখণ্ডে গত ২৫০ বছরের প্রতিরোধ ও লড়াইয়ের ইতিহাস চিত্র ও খোদাইয়ের মাধ্যমে গণমিনারে তুলে ধরার পরিকল্পনা রয়েছে; এই 'গণমিনার' হবে এমন এক স্মরণস্থল, যা রাজনৈতিক বিভাজন অতিক্রম করে সকল মত ও পথের মানুষের সম্মিলিত গণউদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলেন, ৫ আগস্টের জয়ের মাধ্যমে এদেশের মানুষ মুক্তির আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হয়েছে। এই অভ্যুত্থানের শহীদ হয়েছেন সরকারি হিসাবে ১৪০০ জন এবং আহত হয়েছেন হাজার হাজার জন। তাদের স্মরণে নির্মিত হবে গণমিনার। গণমিনার বাস্তবায়নে গণমানুষের সম্পৃক্ততার লক্ষ্যে তাই গণচাঁদার সংগ্রহের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গণ চাঁদা সংগ্রহের ক্ষেত্রে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বার ও অন্যান্য বিস্তারিত দেওয়া হবে। চূড়ান্তভাবে কাজটা কবে শেষ করা হবে এটা এখনই বলা সম্ভব না। আমাদের কাজ এরই মধ্যেই শুরু হয়েছে। আমরা একটা ভিজিবল রূপায়ন দেখতে চাচ্ছি ৫ আগস্ট। তারপরেও এর কাজ চলতে থাকবে।
চলচ্চিত্র নির্মাতা ও স্থপতি কামার আহমাদ সাইমন বলেন, আমাদের এই পরিকল্পনা অনেকদিন ধরে। আমরা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বুঝার চেষ্টা করছিলাম কিভাবে কী করা যায়। আমরা সহজেই আমাদের ইতিহাস ভুলে যাই। লাখ লাখ মানুষ জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করলো, এই যে হাজার হাজার মানুষ জীবন দিল তাদের যেন ভুলে না যাই সেজন্যই আমরা এই উদ্যোগটি নিয়েছি। এখন কথা হচ্ছে কিভাবে মনে রাখবো। একটা হতে পারে জাদুঘরের মাধ্যমে। এর বাইরে আরেকটা উপায় হচ্ছে মিনার। মিনার আর জাদুঘরের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। মিনার হচ্ছে পাবলিক প্লেস। আর জাদুঘর একটা বন্ধ জিনিস। মিনিরে সাধারণত সম্মান প্রদর্শন করার জায়গা। আর জাদুঘর হচ্ছে কোন কিছু সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের জায়গা।
তিনি আরও বলেন, মিনারটিও দুটি উপাদানে করা যায়। একটি হচ্ছে- দেওয়াল আরেকটি হচ্ছে- এপিটাফ যেখানে ১৪০০ শহীদ মানুষকে তাদের নাম, জন্ম ও মৃত্যুর সময়, পেশা, কোথায় শহীদ হয়েছেন সেই তথ্যগুলো দিয়ে আমরা ফলক তৈরি করতে পারি।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত