রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বিক্ষোভ মিছিলে হামলার ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলে একে অন্যকে দায়ী করেছে ‘শাহবাগ বিরোধী ঐক্যজোট’ ও ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট’। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে অনুষ্ঠিত পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তোলা হয়।
শাহবাগ বিরোধীদের দাবি, উস্কানি দিয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করেছে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হামলা করেছে বাম ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্র মিশনের সভাপতি জি এ সাব্বির বলেন, ‘ ২০১৩ সালে দেশের স্বাধীন বিচারিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে শাহবাগে মব তৈরি করেছিল গণজাগরণ মঞ্চ। সেটার বিচার দাবিতে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’র ব্যানারে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এতে বিভিন্ন শিক্ষার্থীবৃন্দ, রাজনৈতিক অরাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। তবে তথাকথিত গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের ব্যানারে বাম-শাহবাগীরা একটি মশাল মিছিল ডাকে। পরিবহন মার্কেটে যখন আমাদের কর্মসূচি শেষ, ঠিক তখনই পেছন থেকে বাম সংগঠনের গুটিকয়েকজন মশালধারী আমাদের শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকার, জামায়াত-শিবির’ বলে বুলিং করে। তারা স্লোগান দিয়ে বারবার মশাল নিয়ে আমাদের দিকে তেড়ে আসে। ইচ্ছে করেই একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে ভিকটিম কার্ড খেলার পুরোনো চেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে আমাদের লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করলে আমাদের এক সহযোদ্ধা গায়ে লাগে। এরপরই মূলত ঘটনার সূত্রপাত ঘটে।’
তিনি বলেন, সবাইকে শান্ত করে দিয়ে আমরা যখন অন্যদিকে চলে গেছি তখন পুনরায় আমরা যে স্থানে ছিলাম সেখানে এসে আমাদের গায়ে পড়ে হাতাহাতি শুরু করেছে। এক পর্যায়ে আমাদের গায়ে জলন্ত মশাল পর্যন্ত ছুঁড়ে মারে লালবাহিনীর সন্ত্রাসীরা। এতে আমাদের কয়েকজন ভাই আহত হয়। উভয়পক্ষের বাগবিতাণ্ডা ও হাতাহাতি থেকে আমাদের কয়েকজন সংগঠক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য।
এদিকে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র গণমঞ্চের সভাপতি নাসিম সরকার বলেন, ‘চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী এ টি এম আজহারুল ইসলামকে দায় মুক্তি দেওয়ার প্রতিবাদে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মশাল মিছিল ডাক দেই। একই সময়ে ছাত্র শিবিরের একটি আনন্দ মিছিল পরিবহন মার্কেটে বামপন্থীদের আড্ডার স্থলকে ঘিরে বারবার প্রদক্ষিণ করতে থাকে। আমরা তাদের কর্মসূচি সমাপ্ত হওয়ার অপেক্ষা করতে থাকি। তাদের সমাবেশ শেষ হওয়ার পরে ৪৫ মিনিট বিলম্বে সোয়া ৮টায় মিছিল শুরু করি। সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রশিবির আনুমানিক ২০০ জনের একটি মব আমাদের দিকে তেড়ে আসে এবং অতর্কিত ইট পাটকেল, চেয়ার ও লাঠি ছুঁড়ে মারতে শুরু করে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, উভয়পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত