ওপেনএআই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উন্নয়নের নতুন ধাপে প্রবেশ করেছে। সংস্থাটি অ্যামাজনের সঙ্গে সাত বছরের জন্য ৩৮ বিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৪ ট্রিলিয়ন টাকা) ক্লাউড সেবার চুক্তি করেছে। গত সপ্তাহে বড় ধরনের পুনর্গঠনের পর এটি ওপেনএআইয়ের প্রথম বড় বিনিয়োগ চুক্তি।
চুক্তির আওতায় ওপেনএআই অ্যামাজনের ক্লাউড ইউনিট অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস থেকে বিপুল পরিমাণ এনভিডিয়া গ্রাফিক্স প্রসেসর ব্যবহার করবে। এই প্রসেসরগুলো চ্যাটজিপিটি ও অন্যান্য এআই মডেল প্রশিক্ষণ ও পরিচালনায় ব্যবহৃত হবে।
ওপেনএআই প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যান জানান, প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ১.৪ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ৩০ গিগাওয়াট কম্পিউটিং অবকাঠামো গড়ে তুলবে—যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহের সমান। অল্টম্যানের ভাষায়, সামনের প্রজন্মের এআই তৈরি করতে বিশাল ও নির্ভরযোগ্য কম্পিউটিং শক্তি দরকার। অ্যামাজনের সঙ্গে এই অংশীদারত্ব সেই সক্ষমতাকেই আরও মজবুত করবে।
চুক্তি ঘোষণার পর অ্যামাজনের শেয়ারের দাম ইতিহাসের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে, যার ফলে কোম্পানির বাজারমূল্য বেড়েছে প্রায় ১৪০ বিলিয়ন ডলার। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই চুক্তি অ্যামাজনের ক্লাউড সেবার প্রতি বড় আস্থা প্রকাশ করছে এবং প্রতিষ্ঠানটির প্রতিদ্বন্দ্বী মাইক্রোসফট ও গুগলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নতুন গতি আনবে।
চুক্তি অনুযায়ী, ওপেনএআই ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ অ্যামাজনের সব নির্ধারিত কম্পিউটিং সক্ষমতা ব্যবহার শুরু করবে। পরে ২০২৭ সালের পরও সেই ক্ষমতা আরও বাড়তে পারে। অ্যামাজন এই লক্ষ্যে শত-সহস্র এনভিডিয়া চিপ স্থাপন করছে, যার মধ্যে থাকবে সর্বাধুনিক GB200 ও GB300 AI অ্যাক্সিলারেটর।
অন্যদিকে, পুনর্গঠনের ফলে ওপেনএআই মাইক্রোসফটের একচেটিয়া ক্লাউড নির্ভরতা থেকে সরে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে গুগল ও ওরাকলের সঙ্গেও চুক্তি করেছে, যার মধ্যে ওরাকলের সঙ্গে প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলারের কম্পিউটিং সেবা কেনার সমঝোতা হয়েছে।
বর্তমানে ওপেনএআইয়ের বার্ষিক আয় প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যদিও কোম্পানিটি এখনও লোকসান গুনছে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এত বড় ব্যয় ও বিনিয়োগ পরিকল্পনা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শিল্পে একদিকে নতুন দিগন্ত খুলছে। 
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল