জেমিমা রদ্রিগেজ; এ মুহূর্তে ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় নারী তারকা ক্রিকেটার। সাতবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নারী বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ১২৭ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলে সব আলো কেড়ে নিয়েছেন। যদিও দলে হারমানপ্রীত কাউর, স্মৃতি মান্ধানাদের মতো তারকা ক্রিকেটার রয়েছেন। অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলায় আগামীকালের ফাইনালে সবার নজর এখন জেমিমার ওপর। আলাদা করে নজরে থাকবেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক লরা ওলভার্ট। দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে তুলতে একাই সামনে থেকে পারফরম্যান্স করেছেন ওলভার্ট। সেমিফাইনালে খেলেছেন ১৬৯ রানের ইনিংস। নাভি মুম্বাই আগামীকাল ক্রিকেট বিশ্বকে উপহার দেবে নতুন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই ফাইনালিস্টের লড়াইয়ের আড়ালে লড়াই হবে জেমিমা ও ওলভার্টের।
জেমিমা খুব ভালো গিটার বাজান। মন ভালো কিংবা মন্দ যাই থাকুক না কেন, প্রিয় গিটারে নিজের সুরে গান করেন। সতীর্থদের সঙ্গে আড্ডা জমাতে বলিউডের জনপ্রিয় গানগুলোও করেন। শুধু গান কেন, ভালো নাচেনও তিনি। ২৫ বছর বয়সি বান্দ্রার মেয়ে জেমিমা রদ্রিগেজ গত পরশু নাভি মুম্বাইয়ে ১২৭ রানের অপরাজিত যে ইনিংসটি খেলেন, সেটা অংকের হিসাবে হয়তো আকাশসমান নয়। কিন্তু রেকর্ড সাতবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ভারতকে ফাইনালে তুলতে যে হিরন্ময় কীর্তি গড়েছেন, সেটা শুধু কল্পনায় সম্ভব। টার্গেট আকাশছোঁয়া ৩৩৯ রান। ইনিংস শুরুর ৫৬ বলের মধ্যে দলের দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটার শেফালি ও স্মৃতি ফিরে যাওয়ার পর দলের দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেন জেমিমা। এ সময় তাকে সহযোগিতা করেন অধিনায়ক হারমানপ্রীত। দুজনের ১৬৭ রানের জুটি দলের জয়ের ভিত গড়ে দেয়। এরপর দলকে জয়ের উচ্ছ্বাসে মাতান জেমিমা। ঠান্ডা মাথায় আকাশসমান চাপ সামলে ১৩৪ বলের ইনিংসটিতে ১৪টি চার মারেন। ২০২২ সালের বিশ্বকাপে সুযোগ পাননি জেমিমা। এবার প্রথমবার খেললেও শুরুটা ভালো হয়নি। শূন্য করেন দুই ম্যাচে। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৬ রানের ইনিংস খেলে বড় কিছুর ইঙ্গিত দেন। সেমিফাইনালে প্রমাণ দেন ১২৭ রানের ম্যাচ জেতানো অপরাজিত ইনিংস খেলে। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সাত ম্যাচে এক সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরিতে ২৭৮ রান করেন জেমিমা।
দক্ষিণ আফ্রিকা ফাইনাল খেলবে, কোনো ক্রিকেট স্পেশালিস্টও বাজি ধরেননি। কিন্তু অধিনায়ক ওলভার্ট ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। তিনি আসরের শুরু থেকে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করেন। ফাইনালের আগে পর্যন্ত আট ম্যাচে ওলভার্ট রান করেছেন ৯৭.৯১ স্ট্রাইকরেটে ৪৭০। যাতে রয়েছে একটি সেঞ্চুরি ও তিনটি হাফ সেঞ্চুরি। গুয়াহাটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৬৯ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংসটি খেলেন ১৪৩ বলে ২০ চার ও চারটি ছক্কায়। তার অন্যান্য পঞ্চাশ ঊর্ধ্ব ইনিংসগুলো ছিল ভারতের বিপক্ষে ৭০, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অপরাজিত ৬০ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯০ রান।