বসুন্ধরা পেশাদার ফুটবলে শীর্ষ ২-এর অবস্থানে পরিবর্তন হলো না। দ্বিতীয় লেগে ঢাকার দুই জায়ান্ট আবাহনী ও মোহামেডান পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে। গতকাল কুমিল্লায় ভাষাসৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ানে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হয়েছে। এর ফলে মোহামেডান ১২ ম্যাচে ৩১ ও আবাহনী ২৭ পয়েন্ট সংগ্রহ করল। অর্থাৎ মোহামেডান এখনো ৪ পয়েন্টে এগিয়ে টেবিলে শীর্ষেই অবস্থান করছে। আবাহনী আছে ২-এ। অন্যদিকে তৃতীয় স্থানে থাকা চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসেরও অবস্থানে কোনো পরিবর্তন হয়নি। মুন্সিগঞ্জ বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে তারা রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডসের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে। এখনো তারা মোহামেডানের চেয়ে ১০ ও আবাহনীর চেয়ে ৬ পয়েন্টে পিছিয়ে থাকল।
কুমিল্লায় ম্যাচ জিতলে মোহামেডান অনেকটা ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যেত। অন্যদিকে আবাহনী পূর্ণ ৩ পয়েন্ট পেলে শিরোপা লড়াই দারুণ জমে উঠত। দুই দলের পয়েন্ট পার্থক্য তখন দাঁড়াত মাত্র ১। যাক, তার কোনোটাই হয়নি। ড্রতেও স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছেড়েছে মোহামেডান।
ছয় রাউন্ড বাকি থাকলেও শিরোপা লড়াই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে গেল। কিংসের সব সম্ভাবনা শেষই হয়ে গেল বলা যায়। গতকাল ম্যাচ জয়ের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল আবাহনী। প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে আবাহনীর সুমন রেজাকে ফাউল করার অপরাধে রেফারি সাইম হাসান মোহামেডানের মাহবুব আলমকে লাল কার্ড দেখান। এতে ফুঁসে ওঠেন গ্যালারিতে মোহামেডানের সমর্থকরা। মাঠে ফ্লেয়ার, টিয়ার শেলের মতো বস্তু ছুড়তে থাকেন। ধোঁয়ায় খেলা ৫ মিনিট বন্ধ ছিল। খেলা শুরু হলে গ্যালারি থেকে মাঠে ফের বোতল ছোড়া হয়। এ অবস্থায় ম্যাচ ১০ মিনিট বন্ধ থাকে।
দ্বিতীয়ার্ধে আবাহনী চাপিয়ে খেলতে থাকে। ৬৫ মিনিটে সুযোগ হাতছাড়া হয়। রাফায়েলের গোল করার প্রচেষ্টা রুখে দেন মোহামেডানের গোলরক্ষক সুজন। এর কিছুক্ষণ পরই আবাহনীর ইব্রাহিম ক্রসবারের ওপর দিয়ে মেরে সুযোগ নষ্ট করেন। এরপর আবার মোহামেডানও গুছিয়ে নিয়ে আক্রমণ করতে থাকে। অধিনায়ক সুলেমান দিয়াবাতে সুন্দর ক্রস দিলে মোজাফফরভ দুরন্ত শট নিয়ে দর্শকের বিরক্তির কারণ হন। ৮০ মিনিটে কর্নারে সুমন রেজার শট দৃঢ়তার সঙ্গে রুখে দেন গোলরক্ষক সুজন। শেষ পর্যন্ত দুই দলকে ড্রতে সন্তুষ্ট হয়েই মাঠ ছাড়তে হয়।
১৫ পয়েন্ট নষ্ট করে কিংস শিরোপা রেস থেকে বেরিয়ে গেলেও কে যে চ্যাম্পিয়ন হবে নিশ্চিত নয়। মোহামেডানের প্লাস পয়েন্ট হয়েছে তারা কিংস ও আবাহনীর মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে ম্যাচ শেষ করেছে। ঢাকা আবাহনীর পরবর্তী ম্যাচই কিংসের বিপক্ষে। সেদিন আবার মোহামেডান হোম ভেন্যুতে খেলবে পুলিশের সঙ্গে। ওই ম্যাচে জিতে গেলে এবং কিংস যদি আবাহনীকে হারায় বা ড্র করে মোহামেডান আরও সুবিধাজনক স্থানে চলে যাবে। তার পরও আবাহনী ও মোহামেডান ম্যাচ খেলবে রহমতগঞ্জ, ব্রাদার্স ও ফর্টিসের সঙ্গে। এরপর আবার পুলিশও আছে। শেষের দিকে কী ঘটে বলা যায় না। তবে মোহামেডান শীর্ষে থেকে শেষ ম্যাচ খেলতে নামলে তাদের শিরোপা নিশ্চিত। কেননা প্রতিপক্ষটা ইয়ংমেন্স ফকিরেরপুল। যদিও প্রথম লেগে তাদের কাছে হেরে গিয়েছিল। তার পরও জিতলেই যখন শিরোপা-এ ম্যাচে অঘটনের আশঙ্কা ক্ষীণ।