আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) ২০৩০ সালে দীর্ঘ ৩০ বছরের কার্যক্রম শেষ করে অবসরে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসা জানিয়েছে, তখন এটি নিরাপদভাবে প্রশান্ত মহাসাগরের একটি নির্দিষ্ট স্থানে নামিয়ে আনা হবে। এর মাধ্যমে মহাকাশ অভিযানের এক ঐতিহাসিক অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটবে।
২০০০ সালের ২ নভেম্বর এক মার্কিন নভোচারী ও দুই রুশ মহাকাশচারী প্রথমবারের মতো স্টেশনে অবস্থান নেন। এরপর থেকে টানা ৩০ বছর ধরে আইএসএস মানব উপস্থিতির ধারক হিসেবে কাজ করে এসেছে।
বহু বছর ধরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন মানব সহযোগিতা ও সাহসিকতার প্রতীক হিসেবে পরিচিত। পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে ঘুরে বেড়ানো এই স্টেশনে বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা একসঙ্গে অসংখ্য গবেষণা পরিচালনা করেছেন। এখন যখন এর সমাপ্তি ঘনিয়ে এসেছে, তখন এর বৈজ্ঞানিক মূল্য ও অবদানের ব্যাপারে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে।
আইএসএস নির্মাণ ও পরিচালনায় প্রায় ১৫০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে। শুধু রক্ষণাবেক্ষণেই নাসাকে প্রতিবছর প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হয়। ১৯৯০-এর দশকে যখন স্টেশনটি চালু হয়, তখন বিজ্ঞানীরা আশা করেছিলেন এখানকার পরীক্ষাগুলো ক্যানসার নিরাময় বা মহাবিশ্বের অজানা রহস্য উন্মোচনে বড় ভূমিকা রাখবে। তবে বাস্তবে ফলাফল এসেছে ধীরে ধীরে।
নাসার তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত স্টেশনে ৪,০০০-এর বেশি পরীক্ষা চালানো হয়েছে এবং সেগুলো থেকে ৪,৪০০ গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষক পাউলা কাস্তানো-রদ্রিগেজের মতে, আইএসএস-এর সবচেয়ে বড় অর্জন হলো বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা। বিভিন্ন দেশ ও গবেষককে একত্রে কাজ করার সুযোগ দিয়েছে এই স্টেশন।
তিনি মনে করেন, এটি শুধু বৈজ্ঞানিক ল্যাব নয়—মানব ঐক্য, সহযোগিতা ও পারস্পরিক বিশ্বাসের এক জীবন্ত প্রতীক। তাই ২০৩০ সালে অবসানের পরও এটি থাকবে মানব ইতিহাসে মহাকাশ সহযোগিতার এক উজ্জ্বল নিদর্শন হিসেবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল