মহাকাশপ্রেমী এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জন্য এক রোমাঞ্চকর খবর! পৃথিবীর আকাশেই এখন আরও এক চাঁদের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। তবে, এটি সেই পরিচিত চাঁদ নয় বরং এক নতুন মহাজাগতিক সঙ্গী। বিজ্ঞানীরা এটিকে ২০২৫ পিএন৭ নামে চিহ্নিত করেছেন। এটি পৃথিবীর একটি কোয়াসি-স্যাটেলাইট বা আধা-উপগ্রহ'। নাসা নিশ্চিত করেছে, এই ক্ষুদ্র বস্তুটি ২০৮৩ সাল পর্যন্ত পৃথিবীর কাছাকাছি থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কী এই নতুন চাঁদ?
'দ্বিতীয় চাঁদ' বলা হলেও ২০২৫ পিএন৭ আসলে একটি ছোট গ্রহাণু। গবেষকদের অনুমান, এর আকার প্রায় ১৮ থেকে ৩৬ মিটার অর্থাৎ একটি মাঝারি আকারের ভবনের সমান। গত আগস্ট মাসে হাওয়াইয়ের হেলিয়াকালা অবজারভেটরিতে প্যান-স্টারস জরিপে এটি প্রথম ধরা পড়ে।
আসল চাঁদের সঙ্গে পার্থক্য কোথায়?
আসল চাঁদের মতো এটি সরাসরি পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে না। বরং ২০২৫ পিএন৭ সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। পৃথিবীর মতো একই গতিপথ অনুসরণ করে। অনেকটা মহাজাগতিক প্রতিবেশীর মতো, যা পৃথিবীর সঙ্গে একই তালে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে কাছাকাছি অবস্থান বজায় রাখে। এই কারণেই দূর থেকে এটিকে পৃথিবীর দ্বিতীয় চাঁদ বলে মনে হয়।
কতদিন থাকবে এই সঙ্গী?
বৈজ্ঞানিক গণনা অনুযায়ী ২০২৫ পিএন৭ এই সহ-কক্ষপথ ব্যবস্থায় অন্তত ২০৮৩ সাল পর্যন্ত পৃথিবীর সঙ্গী থাকবে। এটি মহাকর্ষীয়ভাবে পৃথিবীর সঙ্গে দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ নয় তাই এরপর ধীরে ধীরে এটি তার বর্তমান পথ থেকে দূরে সরে যাবে। মজার বিষয় হলো, পুরোনো সংরক্ষণাগারের ছবি বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এটি সম্ভবত ১৯৬০-এর দশক থেকেই পৃথিবীর কাছাকাছি ভ্রমণ করছে।
বিজ্ঞানীদের আগ্রহ কেন?
ক্ষুদ্র হলেও ২০২৫ পিএন৭ একটি বিরল শ্রেণির বস্তু। একে বিজ্ঞানীরা গবেষণার এক নতুন সুযোগ হিসেবে দেখছেন। এটি আমাদের সৌরজগতের গতিশীল প্রকৃতি, পৃথিবীর কাছাকাছি থাকা গ্রহাণু এবং কক্ষপথের আচরণ নিয়ে নতুন তথ্য দিতে পারে। বিজ্ঞানীরা আশ্বস্ত করেছেন, এর আকার ছোট এবং কক্ষপথ স্থিতিশীল হওয়ায় এটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয়।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল