নেত্রকোনার তিন উপজেলার কম সময়ে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম সিধলি লিংক রোডের প্রায় ১১ কিলোমিটার অংশ চলাচলের অনুপযোগী অবস্থায় রয়েছে। পুরো পথজুড়ে খানাখন্দ, কোথাও আবার পুকুরের মতো অবস্থা। জায়গায় জায়গায় গর্ত থাকায় পথচারী ও যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। বারবার মেরামত করা হলেও সমস্যা একই রকম রয়েছে। স্থায়ী উদ্যোগ না নেয়ার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এই মাত্র ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি নেত্রকোনা থেকে জেলার সীমান্ত উপজেলা দুর্গাপুর ও কলমাকান্দায় পৌঁছানোর জন্য দ্রুততম ও সবচেয়ে সুবিধাজনক পথ। সড়কটিকে বিভিন্ন অংশে ভাগ করে দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে মেরামত ও নির্মাণ করা হলেও শেষ চার থেকে পাঁচ বছর ধরে এটি অবস্থা এখন ভঙ্গুর।
যারা বিকল্প সড়ক ব্যবহার করতে পারেন তারা ব্যবহার করছেন, কিন্তু যারা এই সড়ক ছাড়া চলাচল করতে পারছেন না তারা প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার। বর্ষা ও হেমন্তে চলাচল আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। সড়কের মাঝামাঝি বড়ওয়ারী উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন।
স্থানীয়রা জানান, সড়কটি মাছচাষের পুকুরের মতো অবনতি হয়ে গেছে। দোকানের পাশ দিয়েই পথচারীরা চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন। নেত্রকোনা সিধলি ১৩ কিলোমিটার সড়কে গত দেড় দশকে ধাপে ধাপে ৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকার কাজ হয়েছে। একই সড়কে গত বছরে চারটি প্যাকেজে ৩২ কোটি টাকার কাজ শুরু হলেও মাত্র দুই কিলোমিটার কাজই সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজের তথ্য পাওয়া যায়নি।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালে শূন্য থেকে ৪৫১০ মাইলেজ পর্যন্ত ৫২ লাখ টাকায় বিটুমিন কার্পেটিং (পিচ) করা হয়। ২০১০ সালে ৪৫১০ থেকে ৫০৯০ চেইনেজ পর্যন্ত ১ কোটি ২৫ লাখ টাকায় নতুন করে সড়ক নির্মাণ করা হয়। ২০০৮ সালে ৫০৯০ থেকে ৬২০০ মাইলেজ (এক কিলোমিটার) পর্যন্ত ৩৮ লাখ টাকায় শুধু মেরামত করা হয়। ২০১২ অর্থবছরে ৬২০০ থেকে ৭২০০ মাইলেজ পর্যন্ত ৬৪ লাখ টাকায় ডিপি পাস হয়, কিন্তু কাজের সঠিক তথ্য জানা যায়নি। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৭২০০ থেকে ১৩২০০ মাইলেজ (৬ কিলোমিটার) পর্যন্ত ৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকায় নির্মাণ ও মেরামত করা হয়। ২০২২-২৩ সালে চারটি প্যাকেজে ৩২ কোটি টাকায় কাজ শুরু হলেও দুই কিলোমিটার সড়ক ছাড়া বাকি কাজ হয়নি।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ওয়াহিদুজ্জ জানান, গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির ৮ কিলোমিটার সদরে ও বাকি অংশ কলমাকান্দায় পড়ে। গত বছর দুই কিলোমিটার সড়ক সম্পন্ন হয়েছে। বাকি অংশের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে এবং কাজ দ্রুত সম্পন্ন হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
বিডি-প্রতিদিন/মাইনুল