বৃহস্পতি এক সময় বর্তমানের দ্বিগুণ আকারের ছিল এবং তার প্রাচীন চৌম্বক শক্তি ছিল আজকের তুলনায় বহু গুণ বেশি। সম্প্রতি এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষণা অনুসারে, এই গ্যাস দৈত্য গ্রহটি এক সময় তার বর্তমান আকারের প্রায় দ্বিগুণ বড় ছিল এবং এর চৌম্বক ক্ষেত্র এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, তা কোনো মহাকাশযানকে সহজেই নষ্ট করে দিতে পারত।
নেচার অ্যাস্ট্রোনমি (Nature Astronomy) নামের একটি বৈজ্ঞানিক সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণায় এই তথ্য জানিয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গ্রহবিজ্ঞানী কনস্টানটিন বাটিগিন এবং ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের পদার্থবিদ ফ্রেড সি. অ্যাডামস।
গবেষকরা জানিয়েছেন, সৌরজগত গঠনের শুরুতে, অর্থাৎ প্রায় ৩৮ লাখ বছর পরে যখন সূর্যের চারপাশের গ্যাস ও ধুলার চাকতি (প্রোটোপ্ল্যানেটারি নেব্যুলা) ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছিল— তখন বৃহস্পতির আকার ছিল বর্তমানের প্রায় দ্বিগুণ। সেই সময় এর চৌম্বক বল ছিল আজকের তুলনায় প্রায় ৫০ গুণ বেশি।
তারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, বৃহস্পতির দুটি ছোট উপগ্রহ—আমালথিয়া ও থিবে—এর কক্ষপথের সামান্য বক্রতা বিশ্লেষণ করে। এই উপগ্রহগুলো বৃহস্পতির অনেক কাছাকাছি ঘুরে, এমনকি আইও নামের বৃহস্পতির নিকটতম বৃহৎ উপগ্রহের থেকেও। এই সামান্য কক্ষপথের বিচ্যুতিগুলো বিশ্লেষণ করে গবেষকরা বৃহস্পতির আদি আকৃতি এবং চৌম্বক শক্তির হিসাব বের করেছেন।
গবেষক বাটিগিন বলেন, আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে আমরা কোথা থেকে এসেছি তা বোঝা। আর সেটার জন্য গ্রহগুলোর গঠনের শুরুর দিকটা জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার মতে, এই গবেষণা আমাদের সৌরজগতের গঠন সম্পর্কে আরও পরিষ্কার ধারণা দিচ্ছে।
অন্যদিকে, অধ্যাপক অ্যাডামস বলেন, ভাবতেই অবাক লাগে, ৪.৫ বিলিয়ন বছর পরেও এমন নিখুঁত সূত্র পাওয়া যায়, যার মাধ্যমে বৃহস্পতির সেই আদিম অবস্থা আমরা বুঝতে পারি। এই আবিষ্কার শুধু বৃহস্পতিরই নয়, পুরো সৌরজগতের ইতিহাস বুঝতে বিজ্ঞানীদের নতুন পথ দেখাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল