পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে দেশ ও প্রবাসের সামগ্রিক কল্যাণে আত্মনিয়োগের সংকল্পে ২২ জুন রবিবার নিউইয়র্কের ব্রুকলীনে লিটল বাংলাদেশ এলাকায় প্রবাসের অন্যতম বৃহত্তম পথমেলা অনুষ্ঠিত হলো। এ মেলায় বিপুলসংখ্যক প্রবাসীর সমাগমকে উজ্জীবিত রাখার উদাত্ত আহবানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দিয়েছেন নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে ডেমক্র্যাটিক পার্টির মনোনয়নের দৌড়ে থাকা স্টেট এ্যাসেম্বলিম্যান যোহরান মামদানি, সিটি কাউন্সিলওম্যান শাহানা হানিফ, দেশ ও প্রবাসে আর্ত-মানবতার সেবায় ইতিমধ্যেই খ্যাতি অর্জনকারি ‘আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশন’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট মো. কাদের মিয়া, নিরব সমাজকর্মী হিসেবে পরিচিত ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ ফজলুল হক এবং মো. জাফরউল্লাহ, ফোবানার চেয়ারপার্সন শাহনেওয়াজ, রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর নুরুল আজিম, চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ এবং কাজী আজম প্রমুখ। ‘চার্চ-ম্যাকডোনাল্ড বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশন’ তথা সিএমএমবিবিএর উদ্যোগে এটি ছিল ১৫তম পথমেলা। আগের ধারাবাহিকতায় এবারও বর্ণাঢ্য আয়োজনে এলাকার সকল সামাজিক-সাংস্কৃতিক-পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে পাশে নিয়ে এ মেলার উদ্বোধন করেন লায়ন ফজলুল কাদের। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিশিষ্ট নির্মাণ ব্যবসায়ী ও কলামিস্ট শামসুদ্দিন আজাদ। এ সময় মেলার আয়োজক সংগঠনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম পাটোয়ারি, সেক্রেটারি মইনুল আলম বাপ্পী, মেলা কমিটির আহবায়ক মামুনউর রশীদ, সদস্য-সচিব আনোয়ারুল আজিম, প্রধান সমন্বয়কারি আবুল হাসান মহিউদ্দিন প্রমুখ পাশে ছিলেন।
এ উপলক্ষ্যে চার্চ-ম্যাকডোনাল্ড এলাকায় বাংলাদেশী বাণিজ্যিক পাড়া নবউদ্যমে মেতে উঠেছিল। ৭০টির অধিক স্টল দেয়া হয় পোশাক-খেলনা আর খাদ্যের। ছিল সেবামূলক পরামর্শ প্রদানের স্টলও। সকালে বৃষ্টি ঝড়লেও দুপুর থেকে খরতাপ আর অসহনীয় গরমে কেউ যদি অসুস্থ হয়ে পড়েন-সে ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ব্যবস্থাও ছিল। নিরাপত্তার জন্যে নিউইয়র্কের বেশ কয়েক ডজন পুলিশ ছিল সার্বক্ষণিতভাবে।
মেলামঞ্চে নেতৃবৃন্দ বক্তব্য প্রদানের ফাঁকে ফাঁকে বিশিষ্ট শিল্পীরা জনপ্রিয় সঙ্গীতের মাধ্যমে পুরো আয়োজনকে ভিন্ন এক আমেজে ভাসিয়ে নিয়েছেন। এই মেলা ঘিরে নিউইয়র্কের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রবাসীগণের মধ্যে অভূতপূর্ব এক ঐকতানের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। দলমত নির্বিশেষে একাকার ছিলেন মেলার প্রতিটি পর্বে। মেলামঞ্চে সমাজকর্মে বিশেষ অবদানের জন্যে মো. কাদের মিয়া, জাফরউল্লাহ, নুরুল আজিম, ফিরোজ আহমেদসহ অনেককেই সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয় বিপুল করতালির মধ্যে। সম্মাননা ক্রেস্ট গ্রহনের প্রাক্কালে মো. কাদের মিয়া বলেন, এই সম্মাননা আমাকে আরো উৎসাহিত করবে সমাজকর্মে, মানবতার পাশে দাঁড়াতে।
গান-বক্তব্য আর বিকিকিনির পথ বেয়ে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে র্যাফেল ড্র-নিয়ে সকলে আবর্তিত হন। ৫ ডলারের লটারির টিকিটের প্রথম পুরস্কার ছিল প্রাইভেট কার। এছাড়া আরো দু’জন পুরস্কারের মধ্যে ছিল স্বর্ণের চেইন, লকেট, এলডি টিভি, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ইত্যাদি। চট্টগ্রামের মামুনুল হক মামুন পেয়েছেন প্রথম পুরস্কার। এটি স্পন্সর করেছিলেন নির্মাণ ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক মো. কাদের মিয়া এবং মো, জাফরউল্লাহ। অন্য পুরস্কাগুলোও বিপুল করতালির মধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে বিশাল এই মেলা অনুষ্ঠানে আন্তরিক সহায়তার জন্যে প্রবাসীগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মেলা কমিটির আহবায়ক মামুনউর রশীদ এবং সিএমবিবিএর সভাপতি রফিকুল ইসলাম পাটোয়ারি। তারা উভয়ে সমস্বরে বলেছেন, সহযোগিতার এই দিগন্ত অব্যাহত থাকলে সামনের দিনগুলোতে মানবতার কল্যাণে অনেক কিছুই করা সম্ভব হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ