চাঁপাইনবাবগঞ্জের জহুরপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার পর নিখোঁজ মোহাম্মদ লাল চানের লাশ দেশে এনে গোপনে নিজ বাসস্থান বাদ দিয়ে অন্য জায়গায় দাফন করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নের সাতরশিয়া গ্রামের শাহজাহানের ছেলে মোহাম্মদ লাল চান শনিবার (১৯ জুলাই) রাতে গরু আনার জন্য সদর উপজেলার জোহরপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান। এরপর আর ফিরে আসতে পারেননি। তার কোনো খোঁজও মিলছিল না।
রবিবার সকালে এলাকায় তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লেও তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারেননি। তবে একইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মোহাম্মদ লাল চানের লাশ অত্যন্ত গোপনে জেলার নাচোল উপজেলার নেজামপুরে দাফন করা হয়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নাচোল থানার ওসি মনিরুল ইসলাম।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, শনিবার গভীর রাতে জহুরপুর বিওপির ১৬/৭ সীমান্ত পিলারের কাছ দিয়ে পাঁচজন গরু আনার জন্য ভারতে যান। এ সময় বিএসএফ তাদের চ্যালেঞ্জ করলে চারজন পালিয়ে আসেন এবং মোহম্মদ লাল চান (২৫) বিএসএফের হাতে আটক হন।
পরে তার লাশ পদ্মা নদী পার হয়ে নাচোল উপজেলার নেজামপুরে তার গ্রামের বাড়িতে দাফন করেন স্বজনরা। এ সময় পুলিশ তাদের আইনি সহযোগিতার জন্য ময়নাতদন্তের কথা বললে তারা তা না করার কথা জানান। তার পায়ে বৈদ্যুতিক শকে পুড়ে যাওয়ার চিহ্ন দেখতে পাওয়া গেছে। ফলে বিএসএফ গুলি না করে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে তাকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ব্যাটালিয়ন, ৫৩ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু বলেন, লাল চান নিখোঁজ হয়েছে। সেটা বিভিন্ন মারফতে শুনে ৭১ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন নূরপুর ক্যাস্পের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেছি। তারা বলছে, এ ধরনের কোনো ঘটনা নেই। কিন্তু লাল চানের লাশ কে বা কারা এনে দাফন করেছে বলে শুনেছি। তবে তার পরিবার যদি আমাদের অভিযোগ করে সহযোগিতা চাইত, তাহলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নিতাম।
নাচোল থানার ওসি মুনরুল ইসলাম বলেন, গুলিবিদ্ধের খবর পেয়ে পুলিশ সন্ধ্যা ৬টার দিকে সেখানে যায়। এ সময় লাশ দাফনের জন্য নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় লাশের কাফনের কাপড় খুলে গুলির কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি। তবে তারা বলেছে, জহুরপুর এলাকায় তার দাদার বাড়িতে নাকি বৈদ্যুতিক শক খেয়ে সে মারা গেছে। তার পায়ে বৈদ্যুতিক শক লেগে পোড়ার চিহ্ন দেখা গেছে। নিহতের পরিবার পুলিশের কাছে কোনো আইনি সহযোগিতা চায়নি।