বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির জেরে পটুয়াখালীর গলাচিপা পৌর ও আশপাশের এলাকা এবং দশমিনা উপজেলার দশমিনা ও বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নে ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। গতকাল সকাল ৮টা থেকে আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত এই ১৪৪ ধারা কার্যকর থাকবে। গতকাল সকালে গলাচিপা ও দশমিনা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা, তাদের দোকানপাট, বাড়িঘর ও দলের অফিস ভাঙচুরের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। গতকাল বিকালে গলাচিপা উপজেলা রেস্ট হাউসের সামনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
নুরুল হক নুর বলেন, ‘জেলার ডিসি হাসান মামুন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অনুসারী ছিলেন এবং তারাই তাকে লবিং-তদবির করে এখানে নিয়ে এসেছেন এবং তিনি স্থানীয় একজন বিএনপি নেতা ও হাসান মামুনের সঙ্গে মিলে এখানে হারুন ও বেনজীরদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে চাচ্ছেন। প্রকারান্তে মনে হচ্ছে যে ডিসি আমার প্রতিপক্ষ, এই পটুয়াখালীর ডিসি গণঅধিকার পরিষদের প্রতিপক্ষ হয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, শত শত তাজা প্রাণের বিনিময়ে ’২৪-এর গণ অভ্যুত্থানের জন্ম হয়েছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও স্বৈরাচারী সরকার পতন ঘটিয়ে আজ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদ নিরলস ও শান্তিপূর্ণভাবে নিজ এলাকায় রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমার দলের জনপ্রিয়তা দেখে বিএনপি নেতা হাসান মামুনের অনুসারীরা গলাচিপা, দশমিনা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা, অফিস ও দোকান-বাড়িঘর ভাঙচুরসহ রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি করে আসছেন। শুধু তাই নয়, একটি ভুল মেসেজ শুনে প্রকৃত বক্তব্য না জেনে সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন অপপ্রচার করে যাচ্ছেন। বকুলবাড়িয়াতে পথসভা করতে গিয়ে হাসান মামুনের অনুসারীরা তাকে রাতভর অবরুদ্ধ করে রাখেন। রাস্তার মাঝে গাছ ফেলে রামদা, হকিস্টিক দেশি অস্ত্রসহ প্রকাশ্যে মহড়া দিলেও পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা আমাদের কোনো নিরাপত্তা দিতে পারেননি। তিনি আরও বলেন, ’২৪-এর গণ অভ্যুত্থানের পর সুবিধা নিচ্ছে হাসান মামুনের মতো নেতাদের পরিবার। গণঅধিকার পরিষদ ভেসে আসেনি, অনেক লড়াই সংগ্রাম করে এ দেশের মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ফ্যাসিস্ট সরকার হাসিনাকে ক্ষমতা রেখে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য করেছি। প্রয়োজনে আবারও আমজনতাকে সঙ্গে নিয়ে ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করে একটি রাষ্ট্র উপহার দেওয়ার চেষ্টা করব। সংবাদ সম্মেলনে নুর বলেন, আমি আজকে আসলে বোকা হয়ে গিয়েছিলাম যে, পটুয়াখালী জেলার ডিসির পক্ষ থেকে তাদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে যে এই সংবাদ সম্মেলনটি যেন কভার না করা হয়। আমি যতদূর তথ্য পেয়েছি, ডিসি, ওসি, ইউএনওসহ এখানে লোকাল প্রশাসন ব্যাপকভাবে চাপ তৈরি করছে। আমি যেন এখানে সংবাদ সম্মেলন করতে না পারি।