বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষা খাতের অগ্রগতিতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে চলেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। এ খাতে গত ২০ বছরে জাইকার অংশীদারিত্বমূলক উদ্যোগের পর্যালোচনা ও জেএসপি৩ প্রকল্পের সফল সমাপ্তি উদযাপনে জাইকা ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর যৌথভাবে ‘রিভিউ অব টোয়েন্টি ইয়ারস অব জাইকা কো-অপারেশন ফর প্রাইমারি এডুকেশন ইন বাংলাদেশ অ্যান্ড কমপ্লিশন অব জেএসপি৩ প্রজেক্ট’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করেছে।
বুধবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা।
ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার জাপান সরকার ও জাইকার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, প্রাইমারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (পিইডিপি) ৩ ও ৪ -এর আওতায় জাইকা’র ৫ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন অনুদান বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষাপদ্ধতি মুখস্থ নির্ভরতা থেকে অন্বেষণমূলক শিক্ষাব্যবস্থায় রূপান্তরে জাইকার কারিগরি সহযোগিতামূলক প্রকল্প সমূহ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।
বৈশ্বিক অস্থিরতার প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও পড়েছে। এ প্রেক্ষাপটে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা পিইডিপি৫ প্রকল্পের জন্য অনুদান সহায়তা অব্যাহত রাখতে জাপান সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
জাইকা বাংলাদেশ অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদে গত ২০ বছরের অভিজ্ঞতার বিষয়ে আলোকপাত করেন।
তিনি উল্লেখ করেন, গত দুই দশকে জাইকা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান, পাঠ্য উপকরণ তৈরি, লেসন স্টাডি পদ্ধতির চালু এবং গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ের পাঠক্রম ও পাঠ্যপুস্তক সংশোধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, আগামী ২০-৩০ বছরের জন্য বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে একটি দীর্ঘমেয়াদি ‘জাতীয় লক্ষ্য’ প্রণয়ন করা প্রয়োজন, যা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার দিক-নির্দেশনায় ভূমিকা রাখবে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান। তিনি জাইকার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ধারাবাহিক শেখার মান উন্নয়নে জাইকার সহায়তা অত্যন্ত কার্যকর ছিল।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, জাইকার সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে সরকার প্রাথমিক শিক্ষার পদ্ধতি ও শেখার পরিবেশে আরও ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে।
সেমিনারে মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর, জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (ন্যাপ), জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), উন্নয়ন সহযোগী এবং শিক্ষা খাতের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
সেমিনারটি অতীতের মাইলফলক উদযাপন, গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা বিনিময় ও ভবিষ্যতে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়নে যৌথ উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ভূমিকা রেখেছে।
বিডি প্রতিদিন/একেএ