ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলীয় প্রতীকসহ নিবন্ধন পুনর্বহালের গেজেট প্রকাশের পরদিন গতকাল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এ দাবি জানিয়েছেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদসহ প্রতিনিধিদল। এ ছাড়া বৈঠকে প্রবাসী ভোট, পিআর ভোট পদ্ধতি নিয়েও কমিশনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে তাদের। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে গতকাল সকালে জামায়াতের প্রতিনিধিদলের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
আদালতের আদেশে জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীক পুনর্বহাল করে মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। গতকাল সিইসির সঙ্গে এ বৈঠকের পর হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘আমাদের আজকের ইস্যু ছিল লোকাল গভর্নমেন্ট ইলেকশন (স্থানীয় সরকার নির্বাচন)। আমরা বারবার দাবি করেছি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, কেয়ারটেকার সরকার, অন্তর্বর্তী সরকার যে ফর্মেই সরকার থাকুক না কেন, নির্বাচনকালীন একটি সরকার দায়িত্ব পালন করবে। এ বিষয়ে ঐকমত্য কমিশন কাজ করছে এবং সব দল কিন্তু এ ব্যাপারে একমত হয়েছে।’
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা আছে কিনা সাংবাদিকের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি ইলেকশন কমিশন, সরকার সবকিছু আমরা অবজার্ভ (পর্যবেক্ষণ) করছি। সুতরাং এ জায়গায় আস্থা অনাস্থার বিষয়টা নিয়ে আমরা ফের মন্তব্য করছি না। আমরা অবজার্ভ করছি এবং এ পর্যন্ত যে জায়গায় সঠিক কাজ করেছে সেটা সঠিক বলব। কালোকে কালো, সাদাকে সাদা বলব। যদি ব্যত্যয় ঘটে সে জায়গায় কথা বলতে হবে। আমরা আশাবাদী উনারা (কমিশন) ভবিষ্যতে জনআস্থা সামনে রেখে এগিয়ে যাবেন। বৈঠকে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে (পিআর) ভোটের বিষয়েও আলোচনা করেছে জামায়াতের প্রতিনিধিদলটি। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের পিআর পদ্ধতি হচ্ছে সুন্দর পদ্ধতি। ইসির কাছেও আমরা আনুষ্ঠানিক বৈঠকের মধ্য দিয়ে এটা দাবি উত্থাপন করেছি।’ বর্তমান সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে তা অনেক বেশি ‘নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য’ হবে বলেও মন্তব্য করেছেন হামিদুর রহমান আযাদ। বৈঠকে প্রবাসীদের ভোটার করার উদ্যোগের মধ্যে পোস্টাল ব্যালট ও অনলাইন পদ্ধতিতে ভোটের পক্ষে মতামতও তুলে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জামায়াতের এ নেতা।
এদিকে, প্রতীকসহ নিবন্ধন পুনর্বহাল করায় নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন হামিদুর রহমান আযাদ। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘অন্যায় অবিচার ধামাচাপা দিয়ে জোরপূর্বক রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ন্যায়কে চাপিয়ে রাখা যায় না। বিগত সরকারের আমলে অন্যায়ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল ও দলীয় প্রতীক কেড়ে নেওয়া হয়। চরম অন্যায় করা হয়েছিল। আমাদের অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছিল। মঙ্গলবারের গেজেট আমাদের সেই অধিকার আদালতের আদেশের মাধ্যমে ফিরে এসেছে এবং দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়েছে।’ জামায়াতের প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ও অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার।