দলীয় প্রতীকসহ নিবন্ধন পুনর্বহাল করে গেজেট প্রকাশের পর নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে প্রবাসী ভোট, পিআর ভোট (সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি) ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে নিজেদের অবস্থান আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
বুধবার সকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রতিনিধি দল।
বৈঠক শেষে ‘কেড়ে নেওয়া অধিকার ফিরে’ পেয়েছে মন্তব্য করে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, “প্রতীকসহ নিবন্ধন পুনর্বহাল করায় নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। অন্যায়, অবিচার ধামাচাপা দিয়ে জোরপূর্বক রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ন্যায়কে চাপিয়ে রাখা যায় না।”
তিনি জানান, বিগত সরকারের আমলে একেবার অন্যায়ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হয়; পরবর্তীতে দাড়িপাল্লা দলীয় প্রতীকও কেড়ে নেওয়া হয়।
এ জামায়াত নেতা জানান, “আদালতের আদেশের পর গেজেট প্রকাশে গণাভ্যুত্থানের প্রত্যাশার প্রতিফলন হয়েছে। আমরা এজন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেছি। এখন আগামী নির্বাচনে প্রতীক নিয়ে অংশ নেবে। জনগণের পছন্দের প্রতীক দাঁড়িপাল্লায় ভোট দেওয়ার যে বাধা ছিল এটা উঠে গিয়েছে এবং এটা আরেকটা নতুন দৃষ্টান্ত হয়েছে।”
ইসির সঙ্গে বৈঠকে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে (পিআর) ভোটের বিষয়েও আলোচনা করেছে জামায়াত।
হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচনের পিআর পদ্ধতি হচ্ছে সুন্দর পদ্ধতি। ইসির কাছেও আমরা আনুষ্ঠানিক বৈঠকের মধ্য দিয়ে এটা দাবি উত্থাপন করেছি।”
প্রবাসীদের ভোটার করার উদ্যোগের মধ্যে পোস্টাল ব্যালট ও অনলাইন পদ্ধতিতে ভোটের পক্ষে মতামতও তুলে ধরেছে জামায়াতে ইসলাম। তিনি বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকে পোস্টাল ভোটার, অনলাইন ভোটার পদ্ধতি যেগুলো আছে এগুলো ভোট গ্রহণের জন্য পদ্ধতি হিসেবে নিতে পারেন।”
এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, “আমাদের আজকের ইস্যু ছিল, সেটা হল লোকাল গভর্নমেন্ট ইলেকশন। আমরা বারবার দাবি করেছি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, কেয়ারটেকার সরকার, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেই ফর্মে সরকার থাকুক না কেন নির্বাচনের আগে একটি সরকার আছে এবং সেই কিন্তু ঐকমত্য কমিশন কাজ করছে এবং সব দল কিন্তু এভাবে একমত হয়েছে।”
সেই সরকারে অধীনে যদি ‘লোকাল গভমেন্ট ইলেকশন’ হয় তাহলে এটা অনেক বেশি ফেয়ার এবং গ্রহণযোগ্য হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, “ন্যাশনাল ইলেকশন সামনে হবে। আমাদের দাবি, ন্যাশনাল ইলেকশনের আগে লোকাল গভমেন্ট ইলেকশন করা। এটা এবারের জন্য, ভবিষ্যতের জন্য, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেই ফর্মে নির্দলীয় সরকার আসবে তার অধীনে করা।”
এ নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা আগেও বলেছি আমরা ইলেকশন কমিশন, সরকার সবকিছু আমরা অবজার্ভ করে চলেছি। সুতরাং এই জায়গায় আস্থা অনাস্থার বিষয়টা নিয়ে আমরা আবার মন্তব্য করছি না। আমরা অবজার্ভ করছি এবং এ পর্যন্ত যে জায়গায় সঠিক কাজ করেছে আমরা সেটা সঠিক বলব।কালোকে কালো, সাদাকে সাদা বলবো। যদি ব্যত্যয় ঘটে সে জায়গায় কথা বলতে হবে। এজন্য আমরা অবজার্ভ করছি। আমরা আশাবাদী উনারা ভবিষ্যতে জনস্থাকে সামনে রেখে এগিয়ে যাবে। ”
নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক পুনর্বহালের পর এটি দলটির পক্ষ থেকে প্রথম কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক। আদালতের আদেশে জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীক পুনর্বহাল করে আগের দিন প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন।
আগারগারঁওস্থ নির্বাচন ভবনে সিইসির সঙ্গে এ বৈঠকে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ও অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকারও উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/মুসা