টেলিকম খাতের খসড়া নীতিমালা সংশোধনের দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ইন্টারনেট ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, নতুন গাইডলাইন বাস্তবায়িত হলে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের দাম ২০ শতাংশ এবং ব্যবসায়ী পর্যায়ে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এতে করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
গতকাল বিকাল ৩টা থেকে বিটিআরসি ভবনের সামনে ভিড় জমাতে থাকেন দেশের ইন্টারনেট ব্যবসায়ীরা। একপর্যায়ে তারা মূল এরিয়ার ভিতরে প্রবেশ করে প্রবেশমুখে অবস্থান নেন। এতে উপস্থিত ব্যক্তিরা বলেন, নতুন টেলিকম নীতিমালায় যে রেভিনিউ শেয়ার ও অতিরিক্ত লাইসেন্স ফি ধরা হয়েছে তা কার্যকর হলে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের দাম অন্তত ২০ শতাংশ বাড়বে। এটা শুধু ব্যবসা নয়, দেশের ডিজিটাল ভবিষ্যৎকেও বিপন্ন করবে।
তাদের দাবি, এই গাইডলাইনের আড়ালে মোবাইল অপারেটরদের অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া হচ্ছে, যা দেশি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈষম্য সৃষ্টি করবে। আমরা চাই নীতিমালাটি পুনর্বিবেচনা করা হোক। এর আগে, মহাখালীতে সংবাদ সম্মেলন করে একই ধরনের আশঙ্কা প্রকাশ করে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)। সংগঠনটির নেতারা বলেন, নতুন গাইডলাইনে উচ্চ লাইসেন্স ফি, রাজস্ব ভাগাভাগি ও সামাজিক তহবিলে অতিরিক্ত অর্থ প্রদানের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে, যা সরাসরি গ্রাহকের ওপর প্রভাব ফেলবে। এতে ডিজিটাল শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা এবং সার্বিক ডিজিটাল জীবনধারায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
আইএসপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম অভিযোগ করে বলেন, নতুন নীতিমালা অনুযায়ী ঢাকায় ইন্টারনেটের দাম ১১ শতাংশ এবং ঢাকার বাইরে গ্রামে ১৮.৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে। সরকার ভুল পথে এগোচ্ছে। এই গাইডলাইনে জনগণের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়নি।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা এখন গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আছি। আমাদের উচিত সেই ভবিষ্যতের জন্য মনোযোগ দেওয়া, দায়িত্বশীল নেতৃত্বের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। আমরা সবাই চাই- একটি জনগণের সরকার, একটি দায়িত্বশীল নেতৃত্ব। জনগণের সরকার জনগণের স্বার্থই রক্ষা করবে। ইন্টারনেটের মূল্য নির্ধারণের দায়িত্ব তাদের হাতে ছেড়ে দিন। আমি দেশের সব রাজনৈতিক দলকেও আন্তরিক আহ্বান জানাচ্ছি দয়া করে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করুন। জনগণের পাশে দাঁড়ান, এই সেবাখাতকে এবং দেশীয় উদ্যোক্তাদের বাঁচিয়ে রাখুন। ইন্টারনেটের মূল্য নির্ধারণে আমরা দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। মনে রাখবেন, এই প্রজন্ম চুপ করে থাকবে না। তারা সচেতনভাবে, যথাযথ পথে নিজেদের দাবির পক্ষে এগিয়ে আসবে।