সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। গতকাল বেলা পৌনে ১২টায় তাঁকে কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আকতার বলেন, তিনি অসুস্থতা বোধ করায় চিকিৎসকের পরামর্শে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নোমান মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দীন বলেন, ‘তাঁকে নিয়ে আসা হয়েছে। আমাদের কার্ডিয়াক ইউনিটের সিসিইউতে আছেন। চিকিৎসকরা ওনাকে দেখছেন।’
২৪ জুলাই সকালে ধানমন্ডির বাসা থেকে সাবেক প্রধান বিচারপতিকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গ্রেপ্তার করে। পরে যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলায় আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো কোনো সাবেক প্রধান বিচারপতিকে খুনের মামলায় গ্রেপ্তার ও জেলহাজতে পাঠানোর ঘটনা ঘটে।
তবে বহুদিন ধরেই তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পক্ষপাত, বিতর্কিত রায় এবং সাংবিধানিক সংশোধনের মাধ্যমে বিচার বিভাগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে।
এ বি এম খায়রুল হক ২০১০ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০১১ সালের ১৭ মে পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধন বাতিল করে রায় দেন। তাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অবৈধ হয়ে যায়।
অবসরে যাওয়ার পর ২০১৩ সালের ২৩ জুলাই খায়রুল হককে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয় তাঁকে।
জুলাই গণ অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে ১৩ আগস্ট আইন কমিশন থেকে পদত্যাগ করেন খায়রুল হক। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা হয়।
দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগে ২৭ আগস্ট তাঁর বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।
এদিকে তাঁর বিরুদ্ধে বিধিবহির্ভূতভাবে প্লট নেওয়ার একটি অভিযোগও অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।