খরচ কম, ঝুঁকি প্রায় শূন্য, ফলন বেশি হওয়ায় দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় ভুট্টা চাষে অভাবনীয় সাড়া পড়েছে। চলতি মৌসুমে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে শুধু ভুট্টার সবুজ গালিচা। কৃষকরা বলছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি ভুট্টা চাষ হয়েছে নশরতপুর, তেঁতুলিয়া ও অমরপুর ইউনিয়নে। অনেক জায়গায় ভুট্টার কাদি শস্যে রূপ নিতে শুরু করেছে। কোথাও আগাম জাতের ভুট্টা মাড়াইয়ের কাজ চলছে, আবার কোথাও বিলম্বে বপন হওয়ায় চলছে সেচ ও পরিচর্যা। কৃষকরা জানান, অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষে সময়, খরচ ও শ্রম কম লাগে। সেচ ও সার প্রয়োগও কম। একই সঙ্গে গবাদিপশুর খাদ্য ও জ্বালানির চাহিদা মেটায় বলে এর বাজার চাহিদাও সারা বছর থাকে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, গত মৌসুমে উপজেলায় ভুট্টা চাষ হয়েছিল ৩ হাজার ৩৮৪ হেক্টর জমিতে। চলতি বছর ৩ হাজার ৩৮৩ হেক্টর লক্ষ্য থাকলেও বাস্তবে চাষ হয়েছে ৪ হাজার ১৫০ হেক্টরে। দক্ষিণ নশরতপুর গ্রামের কৃষক ফজলে রাব্বী জানান, তিনি ৩ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। প্রতি বিঘায় ২০-২৫ হাজার টাকা খরচ হলেও ফলন অনুযায়ী আয় হবে ৬০-৬৫ হাজার টাকা। একই গ্রামের শমসের আলী বলেন, ভুট্টা চাষের পাশাপাশি মরিচ ও শাকসবজি চাষ করে বাড়তি লাভ করা যায়। ভুট্টা গাছের পাতা গবাদিপশুর খাদ্য এবং কাণ্ড রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। অমরপুর ইউনিয়নের কৃষক নির্মল রায় জানান, ৫ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন এবং ভালো ফলনের আশা করছেন। তবে মাড়াই ও বাজারজাতকরণে কিছু সমস্যার কথা উল্লেখ করেন তিনি। তবে এখন যন্ত্রের মাধ্যমে সহজেই ভুট্টা মাড়াই করা যায়, এতে কৃষকরা আরও উৎসাহিত হচ্ছেন। চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, ভুট্টা চাষে কৃষকরা এখন ব্যাপকভাবে আগ্রহী। গত বছর আশানুরূপ ফলন পাওয়ায় এ বছর আবাদ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।