বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের কাছে শ্রম সংস্কার অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেছেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। গতকাল রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি এসব অগ্রগতি তুলে ধরেন। পাশাপাশি শ্রম সংস্কার সম্পর্কিত ভবিষ্যতের রোডম্যাপও উপস্থাপন করেন তিনি। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) রাষ্ট্রদূতসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন। তারা সরকারের কার্যক্রমে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, গত আট মাসে আমরা ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছি। আইএলও রোডম্যাপ শুধু একটি দিকনির্দেশনা নয়, এটি একটি প্রতিশ্রুতিও। এর সঠিক বাস্তবায়ন ও ফলাফল অর্জনে আমরা সময়, শক্তি ও সদিচ্ছার যথাযথ প্রয়োগ করছি।
তিনি বলেন, শ্রম অধিকার এখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত শুল্কনীতির মতো বাণিজ্যসংক্রান্ত বিষয় এবং বাজার প্রবেশাধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত। আমাদের সে অনুযায়ীই কাজ করতে হবে।
এ সময় কূটনীতিকরা বলেন, যে কোনো রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেই শ্রম সংস্কার ও জবাবদিহিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ প্রক্রিয়াকে অভূতপূর্ব উল্লেখ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেন, বাংলাদেশের এমন মনোভাবকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আমরা এ সম্পর্কিত আইনের খসড়া এবং মাঠপর্যায়ে শিগগিরই এর বাস্তবায়ন দেখতে চাই। ইউরোপের বাজারে প্রবেশাধিকার অক্ষুণ্ন রাখার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে এই অগ্রগতিকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে পূর্বের শ্রম অধিকার লঙ্ঘনসংক্রান্ত ঘটনাগুলোর জন্য জবাবদিহিও দেখতে চাই। কানাডিয়ান হাইকমিশনার অজিত সিংহ বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত যে অগ্রগতি দেখেছি তাতে সন্তুষ্ট এবং আইএলও রোডম্যাপকে সমর্থন করি। বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রেক্ষাপটে এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বৈঠকে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুক বলেন, বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণের জন্য অবশ্যই শক্তিশালী শ্রম নীতিমালার সমর্থন জরুরি। এজন্য অন্তর্বর্তী সরকার যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছে, অন্যদের মতোই আমিও সেগুলোকে স্বাগত জানাই। আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর তুওমো পউটিয়াইনেন বলেন, বাংলাদেশের শ্রম আইন সংস্কারের খুব কাছাকাছি রয়েছি আমরা। এটি যেন সময়োপযোগী হয় এবং দীর্ঘমেয়াদে শ্রমিকদের সুরক্ষা দেয়।