আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ফ্রিজ ও এয়ার কন্ডিশনারের (এসি) ওপর দ্বিগুণ হারে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আরোপের পরিকল্পনা করছে সরকার। ফলে গ্রীষ্মের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোক্তাদের ওপর চাপ আরও বৃদ্ধি পাবে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
বর্তমানে উৎপাদন পর্যায়ে ফ্রিজ ও এসির ওপর সাড়ে ৭ শতাংশ হারে ভ্যাট রয়েছে। আগামী বাজেটে এ হার বেড়ে ১৫ শতাংশ হতে পারে। বাংলাদেশে ফ্রিজ ও এসি প্রস্তুতকারকদের ওপর করপোরেট ট্যাক্স দ্বিগুণ করার ছয় মাস পর এ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী মাসের শুরুতে অর্থ উপদেষ্টার কাছে এসব প্রস্তাব তুলে ধরা হবে। প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন পেলে এ পরিকল্পনা চূড়ান্ত হবে। বর্তমানে এ দুই খাত থেকে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা ভ্যাট আদায় করা হয়, যা ভ্যাটহার বাড়লে দ্বিগুণ হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের এক কর্মকর্তা বলেন, রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার ও এসির ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের বিদ্যমান হ্রাসকৃত হারে ভ্যাটসুবিধার মেয়াদ আগামী জুনে শেষ হতে যাচ্ছে। এ অব্যাহতির সুবিধা আর বাড়ানো হবে না। তাই এসব পণ্যের ভ্যাটের হার স্ট্যান্ডার্ড রেট বা ১৫ শতাংশ হতে পারে। আইএমএফ ভ্যাট অব্যাহতি কমানোর ওপর জোর দিয়েছে। তা ছাড়া এ শিল্পগুলো ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে করসুবিধা পেয়েছে এবং এখন নিজেরাই দাঁড়ানোর মতো শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।
জানা যায়, এ দুই খাতে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত ভ্যাটের হার ছিল ৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে আরও বাড়িয়ে ভ্যাটহার করা হয়েছিল সাড়ে ৭ শতাংশ। এখন ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। উৎপাদনশীল খাত এগিয়ে নিতে ২০০৯ সালের জুলাইয়ে ফ্রিজ, এসি ও মোটরসাইকেল খাতকে ১২ বছরের জন্য বিশেষ করসুবিধা দেওয়া হয়েছিল। তখন এ খাতগুলোর জন্য করপোরেট করহার ছিল ৫ শতাংশ। পরে ২০২০-২১ অর্থবছরে তা বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছিল। চলতি বছরের জানুয়ারিতে এ খাতগুলোর করপোরেট করহার ২০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়, যা ২০৩২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। এসি ও ফ্রিজে ভ্যাট বাড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো আইনুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের রাজস্ব ৬৫ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি থাকায় বিভিন্নভাবে আয় বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। ভ্যাট বাড়লে এ শিল্পের জন্য একটু সমস্যা হবে, এসব পণ্যের দাম বেড়ে যাবে।
দাম বাড়লে চাহিদা কমতে পারে, রপ্তানিও কমতে পারে। এসব ক্ষেত্রে গবেষণা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। একবারে দ্বিগুণ না করে অল্প করে বাড়ানো যেতে পারে।’