সমাজের বেশির ভাগ কিশোর, যুবক ও মধ্যবয়সী পুরুষকে দেখা যায়, তারা পেছনের দিকে চুল ছোট রেখে সামনের দিকে বড় রাখে। কলেজ শিক্ষার্থী হাদিউল ইসলামের প্রশ্ন, শরিয়তের দৃষ্টিতে এভাবে চুল রাখার বিধান কী? ইসলাম পুরুষকে কিভাবে চুল রাখতে বলে?
প্রাজ্ঞ আলেমরা বলেন, মাথার পেছনের দিকের এবং দুই পাশের চুল ছোট রেখে সামনের দিকে চুল বড় রাখা শরিয়তের দৃষ্টিতে নাজায়েজ নয়। তবে তা নেককার ও আল্লাহভীরু মানুষের বৈশিষ্ট্য নয়। সাধারণ দ্বিনবিমুখ মানুষের অনুসরণে এমনটি করা হয়।
তাই এমন রীতি পরিহার করা উচিত। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সেই সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য গ্রহণ করবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪০৩১)
মুসলমান চুল রাখার ক্ষেত্রে অবশ্যই সুরুচির পরিচয় দেবে। সে বিদঘুটে পদ্ধতিতে ও দৃষ্টিকটু স্টাইলে চুল কাটবে না।
ইবনে ওমর (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে ‘কাজা’ থেকে নিষেধ করতে শুনেছি। (বর্ণনাকারী ওবায়দুল্লাহ বলেন) আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কাজা’ কী? তখন আবদুল্লাহ (রা.) আমাদের ইঙ্গিতে দেখিয়ে বললেন, শিশুদের যখন চুল কামানো হয়, তখন এখানে-ওখানে চুল রেখে দেয়। এ কথা বলার সময় ওবায়দুল্লাহ তাঁর কপাল ও মাথার দুই পাশে দেখালেন। ওবায়দুল্লাহকে আবার জিজ্ঞাসা করা হলো, বালক ও বালিকার জন্য কি একই নির্দেশ? তিনি বলেন, আমি জানি না।
এভাবে তিনি বালকের কথা বলেছেন। ওবায়দুল্লাহ বলেন, আমি এ কথা আবার জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বলেন, পুরুষ শিশুর মাথার সামনের ও পেছনের দিকের চুল কামানো দূষণীয় নয়। আর (অন্য এক ব্যাখ্যা মতে) ‘কাজা’ বলা হয়, কপালের ওপরে কিছু চুল রেখে বাকি মাথার কোথাও চুল না রাখা। তেমনিভাবে মাথার চুল এক পাশ থেকে অথবা অন্য পাশ থেকে কাটা। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৯২১)
শরিয়তে পুরুষের চুল রাখার তিনটি পদ্ধতি পাওয়া যায়—
১. বাবরি চুল রাখা। বাবরি হলো কানের লতি বা ঘাড়ের অর্ধেক পর্যন্ত চুল লম্বা করা। বাবরির সর্বোচ্চ সীমা কাঁধের কাছাকাছি পর্যন্ত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বেশির ভাগ সময় বাবরি চুল রেখেছেন।
২. পুরো মাথার চুল মুণ্ডিয়ে ফেলা।
৩. পুরো মাথার চুল সমানভাবে ছোট করে রাখা। (ইমদাদুল আহকাম : ৪/৩৩৪; কিতাবুত তারাজ্জুল, পৃষ্ঠা-৭৭; বাজলুল মাজহুদ : ১৭/৮৩)
আল্লাহ সব বিষয়ে সবচেয়ে ভালো জানেন।
বিডি প্রতিদিন/মুসা