ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের উত্তরকাশী জেলায় ভয়াবহ মেঘভাঙা বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় নিখোঁজ হয়েছেন ১০০ জনেরও বেশি মানুষ।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের দিকে ধারালি গ্রামে হঠাৎ করে প্রবল জলস্রোত নেমে আসে, ভেসে যায় রাস্তা, ঘরবাড়ি ও বহু অবকাঠামো। ইতোমধ্যে ১৯০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী।
ধারালি জনপ্রিয় একটি গ্রীষ্মকালীন পর্যটনস্থল। হরসিল থেকে মাত্র ২ কিমি দূরে অবস্থিত। এলাকাটি একটি প্রধান সেনাঘাঁটি এবং ইন্দো-তিব্বত বর্ডার পুলিশের ক্যাম্পের নিকটে। বন্যায় সেনাবাহিনীর অন্তত ১০ জন সদস্য নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী ধামী। হেলিকপ্টারে করে দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তবে ভারি বৃষ্টি ও কাদাপানির কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। হেলিকপ্টার দিয়ে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে গতি আনার চেষ্টা চলছে।
বন্যার ফলে কীরগঙ্গা নদীর জলধারা হঠাৎ বেড়ে যায় এবং তা পাহাড় বেয়ে নেমে আসে। এতে ভগীরথী নদীর একটি অংশ কাদা ও ধ্বংসাবশেষে আটকে গিয়ে কৃত্রিম হ্রদের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ডুবে গেছে একটি সরকারি হেলিপ্যাডসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছে, দ্রুত এই জল অপসারণ না করলে তা নিচের দিকের গ্রামগুলোতে মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
আবহাওয়া বিভাগ আগামী দিনগুলোতেও ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে এবং জনগণকে ভূমিধসপ্রবণ এলাকা এড়াতে পরামর্শ দিয়েছে। রাজ্যের কিছু এলাকায় স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এর আগেও ২০১৩ ও ২০২১ সালে উত্তরাখণ্ডে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ব্যাপক প্রাণহানি হয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পাহাড়ে অবৈজ্ঞানিক নির্মাণ এই ধরনের দুর্যোগের আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল