গাজার শরণার্থী তাঁবুতে বাস করা মায়েরা নিরুপায়। কীভাবে সন্তানকে খাবার দেবেন সেই চিন্তাতেই তারা হিমশিম। তারা শুধু সন্তানকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন।
এখানে রয়েছেন লিনা। তাঁর ছেলে ওমরের বয়স মাত্র নয় মাস। অপুষ্টিতে ভুগছে, সঙ্গে আছে হাঁপানির মতো শ্বাসকষ্ট। গত ছয় সপ্তাহে এক ফোঁটা দুধও জোটেনি ওমরের কপালে।
লিনা বললেন, আমার সন্তানের জন্য কোনো দুধ নেই। কোনো খাবার নেই, কোনো বিকল্প নেই—শুধু পানি। আমি শুধু পানি খাইয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরও জানান, চার মাস ধরে ফর্মুলা মিল্ক পাইনি। এই প্রথম একটু পেলাম। ভাবতে পারেন, আপনার সন্তান দুধের জন্য কাঁদছে আর আপনি কিছুই দিতে পারছেন না?
যদি কোনোভাবে বাজারে ফর্মুলা দুধ পাওয়া যায়, তাও হয় মেয়াদোত্তীর্ণ কিংবা এতটাই দামি যে সাধারণ মানুষ তা কিনতে পারে না।
খান ইউনিসে বসবাসরত জুদ লড়ছেন তার যমজ সন্তান তাওফিক ও নায়াকে বড় করে তোলার লড়াইয়ে। তাদের বয়স মাত্র দশ মাস। কখনও মায়ের বুকের দুধ পান করেনি তারা। কারণ, জুড নিজেই এতটাই অপুষ্ট যে তার শরীরে দুধই তৈরি হয় না।
জুদ এখন তাঁর শিশুদের খাওয়ান মসুর ডাল আর পানি মিশিয়ে।
এই চিত্র এখন গাজার প্রতিটি মায়ের বাস্তবতা। নেই পরিষ্কার পানি, নেই ফর্মুলা দুধ, নেই নিরাপদ কোনো খাদ্য। শুধু প্রতিদিনের একটি সংগ্রাম—সন্তানকে বাঁচিয়ে রাখার সংগ্রাম।
প্রতিটি মা একটি মৌন প্রার্থনায় বুক বেঁধেছেন—যেন আগামীকালও তাঁদের সন্তান জীবিত থাকে, যেন কোনোভাবে একটু সহায়তা আসে।
সূত্র: আল জাজিরা
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল