ইসরায়েলি বিমান হামলায় পরিবারের কয়েকজন সদস্যসহ গাজার একটি হাসপাতালের পরিচালক ড. মারওয়ান সুলতান নিহত হয়েছেন।
হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের পরিচালক ড. মারওয়ান সুলতান দীর্ঘ সময় ধরে চিকিৎসা পেশার সাথে যুক্ত ছিলেন।
একইসাথে এই ঘটনাকে গাজার ‘মেডিকেল কর্মীদের বিরুদ্ধে নৃশংস অপরাধ’ উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, গাজা সিটি এলাকায় হামাসের ‘একজন গুরুত্বপূর্ণ সন্ত্রাসীকে’ লক্ষ্য করে তারা হামলা চালিয়েছে এবং ‘জড়িত না এমন বেসামরিক নাগরিকদের’ ক্ষতি হওয়ার দাবি পর্যালোচনা করছে।
এদিকে, ‘নিরাপদ অঞ্চল’ আল-মাওয়াসিসহ বিভিন্ন জায়গায় চালানো হামলায় শিশুসহ অন্তত পাঁচজন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থাগুলো।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ড. সুলতানের চিকিৎসাজীবন ছিল সহানুভূতিশীলতায় পূর্ণ, ‘যেখানে তিনি আমাদের জনগণের ওপর চলমান আগ্রাসনের সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি আর দুঃসহ মুহূর্তে অটলতা ও আন্তরিকতার প্রতীক হয়ে ছিলেন।’
ড. সুলতান যে ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের পরিচালক ছিলেন, সেটিকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার ‘অযোগ্য’ ঘোষণা করেছিল হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, আর জাতিসংঘ জানিয়েছিল ‘বারবার ইসরায়েলি হামলায় স্থায়ী অবকাঠামোগত ক্ষতির’ শিকার হয়েছে হামপাতালটি।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা ওই এলাকায় ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামো লক্ষ্য করে’ লড়াই চালাচ্ছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, উত্তর গাজার প্রশাসনিক এলাকায় এখন আর কোনো কার্যকর হাসপাতাল নেই।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে চিকিৎসা ও মানবিক টিমকে লক্ষ্য করে বার বার হামলার অভিযোগ তুলেছে হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) তাদের এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ‘জড়িত নয় এমন ব্যক্তিদের ক্ষতি হওয়ার বিষয়টিকে দুঃখজনক’ বলে মনে করে আর ‘এমন ক্ষতি এড়াতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে’।
ড. সুলতানের মেয়ে লুবনা আল-সুলতান জানান, ‘একটি এফ-১৬ ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি তার ঘর লক্ষ্য করে আঘাত করে।’
‘বাড়ির সব কক্ষ অক্ষত থাকলেও কেবল তার কক্ষটিই ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ধ্বংস হয়েছে, আমার বাবা সেখানেই শহীদ হয়েছে,’ অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, তার বাবা ‘কোনো দল বা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না, যুদ্ধের পুরোটা সময় তিনি কেবল তার চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্য চিন্তিত ছিলেন।’
ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে গাজাজুড়ে বুধবার (২ জুলাই) দুপুরের আগের ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১৩৯ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
খান ইউনুসের আল-মাওয়াসি এলাকায় চালানো ইসরায়েলি হামলায় একটি তাঁবুতে আশ্রয় নেওয়া অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছে এবং শিশুসহ আরও অনেকে আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থাগুলো।
নিহতদের স্বজনরা জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৪০ মিনিটে হামলাটি যখন চালানো হয়, তারা ঘুমিয়ে ছিলেন।
সূত্র : বিবিসি ও আল-জাজিরা।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত