সম্পূরক বৃত্তি দ্রুত নিশ্চিতকরণ, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ, ফ্যাসিস্ট শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিচার নিশ্চিত করে জকসু নির্বাচনের সমস্ত কার্যাবলী দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় রফিক ভবনের নিচে তিন দফা দাবিতে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বলেন, আমরা লংমার্চ টু যমুনার আন্দোলন করেছি ঐক্যবদ্ধভাবে কিন্তু এখন একটি পক্ষ ক্রেডিট নেবার চেষ্টা করছে। সম্পূরক বৃত্তির জন্য আমাদের ছাত্রদলের ভাইয়েরা তিনদিন রাত-দিন না ঘুমিয়ে রক্ত, ঘাম ঝাড়ানোর পরেও সবাই দিচ্ছে, দিবে করে কালক্ষেপণ করছে। অতি শীঘ্রই আমাদের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ভিত্তি দিতে হবে নতুবা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে কঠোর আন্দোলন করব।
নেতাকর্মীরা আরও বলেন, জকসু নির্বাচনের জন্য একটি মহল তড়িঘড়ি করে পায়তারা করছে। আমরা স্পষ্ট ভাষা বলে দিতে চাই ছাত্রলীগের বিচার এবং আওয়ামী শিক্ষকদের বিচার নিশ্চিত করা ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। আমরা জকসুর বিরোধী নয় আমরাও জকসু চাই কিন্তু ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ভোটার রেখে এ নির্বাচন আমরা মেনে নেব না।
মানববন্ধনে জবি শাখা ছাত্রদল আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ছাত্রদল জকসু নির্বাচনের বিপক্ষে নয়। কিন্তু যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে গণহত্যাকারী শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এখনো আছে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের জকসুর নির্বাচনে ভোটার হবে ছাত্রলীগের হামলাকারীরা সেই নির্বাচন শিক্ষার্থীদের কল্যাণে হতে পারে না। আমরা দেখেছি কিছু কিছু লোক আবাসন ভাতার বিষয়টি পিছনে রেখে ভিন্ন উদ্দেশ্যে জকসু নির্বাচনকে সামনে আনতে চাচ্ছে। আমরা বলতে চাই, ছাত্রদল জকসু নির্বাচন চায় তবে তার আগে আমাদের যে শিক্ষার্থীরা খেতে পারে না ঠিকভাবে তার খরচ চালাতে কষ্ট হয় তার জন্য আবাসন ভাতা নিশ্চিত হোক।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই জকসু প্রয়োজনে পরশুদিন আয়োজিত হোক। তবে তার আগে আগামীকাল ছাত্রলীগের বিচার নিশ্চিত করা হোক। শিক্ষার্থীদের জন্য সম্পূরক বৃত্তি ও ছাত্রলীগের বিচারের মাধ্যমে জকসু নির্বাচনের জন্য আগামীতে আমরা আর কঠোর কর্মসূচি দেব।
ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, আমরা সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে প্রশাসনকে ভিতরে রেখে নয় বাহিরে রেখে তালা দিয়ে দেব। আমরা আন্দোলন করলে এখানে বসে থাকতে পারবেন না। কুসুম কুসুম আন্দোলন করে কিছু খুচরা সংগঠন রাতারাতি জকসুর নেতা হতে চায়। আমরা কি এসব বুঝি না কেন এত তড়িঘড়ি করে নীতিমালা পাসের জন্য প্রশাসনকে অবরুদ্ধ করে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে তারা?
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট আমলের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগের বিচারের আগে কোনো জকসু হবে না। আমার ভাই-বোনেরা মেসে কষ্টে দিনযাপন করবে আর প্রশাসন হানিমুন করে বেড়াবে এটা হতে দেব না। সুস্পষ্ট সময়ে সম্পূরক বৃত্তি ও বিচার কাজ শেষ করে জকসু নির্বাচন দেন না হলে ছাত্রদল শিক্ষার্থীদের নিয়ে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেব প্রশাসনকে।
এসময় আরও বক্তব্য দেন শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক জাফর আহমেদ, সুমন সরদার, মুস্তাফিজুর রহমান (রুমি), শাহরিয়ার আহমেদ, রবিউল আউয়াল, নাহিয়ান বিন অনিক, সাখাওয়াত ইসলাম পরাগ, মিয়া রাসেল সহ অন্যান্যরা। এসময় শাখা ছাত্রদলের অন্যানয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
তিন দফা দাবি হলো মন্ত্রণালয়ের আশ্বাস মোতাবেক শিক্ষার্থীদের জন্য ৭০ শতাংশ আবাসন ভাতা প্রদান বাস্তবায়ন করা, ফ্যাসিস্ট ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও আওয়ামী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনা এবং দ্রুত জকসুর নীতিমালা প্রনয়নসহ সকল কর্যক্রম শেষ করা।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল